ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সড়ক ও জনপথের জায়গায় দোকান, অবৈধ অর্থ বাণিজ্য

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
সড়ক ও জনপথের জায়গায় দোকান, অবৈধ অর্থ বাণিজ্য

মানিকগঞ্জ: অবৈধভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল, দোকান বরাদ্দ দিয়ে অবৈধ অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে কাজী বিপু রহমান নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ এসব দোকান অপসারণের নোটিশ দিয়েছে।

কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বরং মানিকগঞ্জের বাসিন্দা বিপু বলছেন, স্থাপনাগুলো তিনি নিজ সম্পত্তির ওপর গড়ে তুলেছেন।

জানা গেছে, জেলা শহরের প্রবেশদ্বারের বিপরীত পাশে স্থাপিত নবীন সিনেমা হল ও নবীন কমপ্লেক্সের সামনে নিজের অবৈধ দোকান নির্মাণ করেছেন বিপু। বাণিজ্যিকভাবে সেখানে তৈরি পোশাক ও কাপড় বিক্রি হয়। প্রতি পাঁচ ফিট পজিশন জায়গার জন্য তিন লাখ, কখনও তারও বেশি জামানত নেন তিনি।

অভিযোগ আছে, সড়ক ও জনপথের জায়গার উপর থেকে ভুয়া মালিকানা দাবী করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত অর্ধ কোটি টাকা জামানত আদায় করেছেন বিপু রহমান। দোকান প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় আদায় করেন বিপুর ম্যানেজার মো. কাজীমুদ্দিন। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধ এ কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে আসছেন ওই নারী। অবৈধভাবে এ ব্যবসা পরিচালনায় স্থানীয় কয়েকজন নেতাকে বার্ষিক ও মাসিক মাসোয়ারা দেওয়ারও অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে।

সড়ক ও জনপথের জমিতে ব্যবসা পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অনেকেই টিনশেড ওয়াল করতে তিন বছর আগে ১৫ লাখ টাকা জামানত দিয়েছেন। প্রতি মাসে মোটা অংকের ভাড়া দিয়েছেন। এখন তারা জানেন, মার্কেটের জমি সরকারি। বিপু রহমানের কাছে জামানতের টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি ব্যবসায়ীদের ঘোরান। সড়ক বিভাগ থেকে মার্কেট উচ্ছেদে নোটিশ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীরা অনেকেই দুশ্চিন্তায় আছেন।

অনেকে বিপু রহমানকে ধুরন্ধর নারী আখ্যা দিয়ে বলেন, তার সঙ্গে বহু বিভিন্ন দলের বহু নেতার সঙ্গে সখ্যতা রয়েছে। যে কারণে ভয়ে তারা কথা বলতে পারেন না। দোকান বরাদ্দের জন্য তাদের কয়েকজন বিপুকে অর্ধ কোটি টাকা জামানত দিয়েছেন। নোটিশ পাওয়ার পর তার কাছ থেকে জামানতের টাকা ফেরত চাওয়ায় নানা হুমকি দিচ্ছেন বিপু।

এসব ব্যাপারে বিপুর ম্যানেজার কাজীমুদ্দিন বলেন, সড়ক বিভাগ যে নোটিশ দিয়েছে, তা ঠিক নয়। কারণ জায়গাটি তাদের নয়। জমির মালিক কাজী বিপু রহমান। তার সম্পত্তিতে যারা দোকান নিয়েছেন তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তিপত্র রয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রতি মাসে আমাদের ভাড়া দেয়। সেটি আমি মালিকের কাছে তুলে দিই।

কাজী বিপু রহমানের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার জামানত নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, তারা গরিব মানুষ। আমার ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় দোকান করে। আমার ম্যানেজার তাদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করেন। সড়ক বিভাগ পরিমাপ করে যদি তাদের জায়গা বলে প্রমাণ করে, নিয়ে যাবে।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউস-উল-হাসান-মারুফ বলেন, নবীন সিনেমা হলের সামনে কাপড়ের দোকানগুলো সড়ক বিভাগের জায়গা। যারা মালিকানা দাবি করছেন, বা দোকান করেছেন; তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। দোকানগুলো সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।