ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক এখনও বন্ধ, চলাচল নিয়ন্ত্রিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক এখনও বন্ধ, চলাচল নিয়ন্ত্রিত

ঢাকা: রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এলাকাটি। একই সঙ্গে বন্ধ করা হয় যান চলাচল।

নিয়ন্ত্রণ করা হয় পথচারীদের চলাফেরা। এ অবস্থা বৃহস্পতিবারও (৮ ডিসেম্বর) বিদ্যমান।

জানা গেছে, জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া নয়াপল্টনের রাস্তায় পথচারীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে পুরোপুরি বন্ধ। কোনো যানবাহন যাতে এ সড়কে প্রবেশ না করতে পারে বিজয়নগরের নাইটিংগেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড়ে তাই ব্যারিকেড বসিয়েছে পুলিশ।

এছাড়া, এলাকাটিতে যাদের বাসা-বাড়ি ও কর্মস্থল রয়েছে, তাদের চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পথচারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ব্যাগ ও শরীর তল্লাশি করে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। যাদের পরিচয় পুলিশ নিশ্চিত হতে পারছে না, তাদের ব্যারিকেড থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তবে পরীক্ষার্থীরা যাতে দ্রুত নিজ নিজ হলে পৌঁছতে পারে, শুধু তাদেরই সড়ক ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে।

ভিআইপি সড়ক নামে পরিচিত বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত অলিগলিতেও পুলিশের ব্যারিকেড দেখা গেছে। বাসিন্দাদের পরিচয় দিয়ে এসব ব্যারিকেড ডিঙিয়ে বের হতে দেখা গেছে। এছাড়া নয়াপল্টন এলাকার সকল দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে।

বিএনপি কার্যালয়সহ পুরো এলাকায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিত দেখা গেছে। রয়েছে জল কামানসহ পুলিশের বিভিন্ন সাজোয়া যানও।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এনামুল হক মিঠু বলেন, নিরাপত্তার কারণে ভিআইপি রোডে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে যারা সরকারি দপ্তর, ব্যাংক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজে বের হয়েছেন তাদের আমরা চেক করে পায়ে হেঁটে ঢুকতে দিচ্ছি। এছাড়া এলাকার মার্কেটগুলোয় আজ সপ্তাহিক বন্ধ।

এর আগে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। এক পর্যায়ে রাস্তার একপাশ বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে যায়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বিকাল পৌনে ৩টায় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নয়াপল্টন।

সংঘর্ষের সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। জবাবে পুলিশও পাল্টা টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি ছুঁড়ে। এতে নিহত হন মকবুল নামের একজন, আহত হন বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী।

প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে বিকাল সাড়ে ৪টায় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এ সময় কার্যালয়ের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ১৫টি ককটেল। জব্দ করা হয় ১৬০ বস্তা চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা। পরে অভিযান শেষে ককটেলগুলো বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নিষ্ক্রিয় করা হয়।

এছাড়া সংঘর্ষের পর থেকে অভিযান পর্যন্ত বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুল কাদের ভূঁইয়াসহ প্রায় ৩০০ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।

অভিযান শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে যাচাই বাছাই করা হবে। কেউ যদি নির্দোষ হয়, তবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর যাদের বিরুদ্ধে তথ্য পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে অভিযান চলাকালীন দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, পুলিশ ব্যাগে করে বিস্ফোরক দ্রব্যাদি ভেতরে নিয়ে গেছে।

এদিকে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সারাদেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বুধবার রাতে এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।