ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাবনায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
পাবনায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

পাবনা: পাবনা পৌর এলাকার ডিজিটাল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় সিরাজুল ইসলাম (৩০) এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।  

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে নাকের পলিপাস অপারেশন করতে এসে তার মত্যু হয়।

সিরাজুল পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের মৃত আতিয়ার মণ্ডলের ছেলে। তিনি একটি কারখানায় চাকরি করতেন।  

রাতে রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে অস্ত্রপ্রচারের সময় থাকা চিকিৎসক পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হারুনার রশিদ ও অজ্ঞানকারী অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামসুল হক কৌশলে পালিয়ে যান।  

এদিকে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয় হাসপাতালে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমঝোতার চেষ্টা করে স্বজনদের সঙ্গে। তবে রোগীর স্বজনরা ৯৯৯ ফোন দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র‌্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে পাবনা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় মরদেহ। এ ঘটনার কথা সকালে জানাজানি হলে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ছুটে যান সেখানে। তবে ওই হাসপাতালে গেলে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। সকালে মরদেহ নিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য অপেক্ষা করছিলেন পরিবারের সদস্যরা।  

স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, সামান্য পলিপাস অপারেশনের জন্য রোগীর মৃত্যু এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। রোগীর অপারেশনের পরেই তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি নার্স-চিকিৎসক সবাই ছোটা-ছুটি করছিলেন সে সময়। তাদের কাছে জানতে চাইলে চিকিৎসক আমাদের ধমক দিয়ে বসিয়ে রাখেন। আমরা জোর করে অপরেশন থিয়েটার কক্ষে প্রবেশ করলে দেখি রোগীর মত্যু হয়েছে। এ অপারশেনের সময় যারা যুক্ত ছিলেন তাদের সবার ভুল চিকিৎসা ও অপারেশনের কারণে তার মত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকসহ অস্ত্রপ্রচারের সময় যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।  

এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রাতেই রোগীর স্বজনদের টাকা দিয়ে বিষয়টি ধাপমাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও সিভিল সার্জন।

ডিজিটাল হাসপাতালের সহকারী ম্যানেজার মো. সরফিকুল ইসলাম ও ওটি ইনচার্জ মো. সালাউদ্দিন বলেন, কীসের জন্য তার মত্যৃ হয়েছে সেটি আমরা বলতে পারছি না। তবে তার অবস্থা খারাপ হলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারকে জানিয়েছি। তিনি আমাদের যেভাবে বলেছেন সেভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে অপারেশনের পরে রোগী কথা বলেছেন আমাদের সঙ্গে।  

এদিকে রোগীর স্বজনদের অভিযোগের আলোকে চিকিৎসকের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আসলে রোগীর স্বজনরা তার মৃত্যুর পরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাক্তার চলে গেছেন।

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা, মনিসর চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের নামে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে সেটি তদন্ত করে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
 
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী পুলিশ বলেন, ঘটনার বিষয়ে গতকাল শোনার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত ও পরিবারের অভিযোগের আলোকে দোষীদের নামে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২২
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।