ঢাকা: মো. আক্কাস আলী থাকেন টঙ্গী স্টেশন রোডে। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হেঁটে রাজধানীর আব্দুল্লাপুর দিয়ে উত্তরা যাচ্ছিলেন।
এদিকে চেকপোষ্টের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তার মুঠোফোন চেক করেন এবং সেখানে ১০ ডিসেম্বর সংক্রান্ত উস্কানিমূলক ছবি দেখতে পান। পুলিশ তার কাছে জানতে চায় আসলে তিনি কী কারণে সেখানে যাচ্ছেন। তার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পারায় পুলিশ তাকে ফের বাসার (টঙ্গী) দিকে ফিরিয়ে দেন।
শুধু আক্কাস আলী নয়, তার মতো যার মোবাইলেই অপ্রীতিকর কিছু পাওয়া যাচ্ছে, তাকেই রাজধানীতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বেশি সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলাদা করে থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর অন্যতম একটি প্রবেশমুখ আব্দুল্লাহপুর সড়কে রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। তল্লাশির মাধ্যমে সবাইকে রাজধানীতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে যারা চাকরিজীবী বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন, তাদের পরিচয় সনাক্ত করা হলে, আইডি কার্ড অথবা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা বা ডকুমেন্ট সঙ্গে থাকলে তবেই তাকে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে রাজধানীর আব্দুলাপুরে দেখা যায় গাজীপুর-টঙ্গী থেকে ঢাকাগামী সড়কে কোন বাস চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে না গণপরিবনের সংখ্যা একেবারেই কম মোটরসাইকেলে যারা চলাচল করছেন তাদেরও তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে।
আব্দুল্লাহপুরের গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী প্রবেশমুখে রয়েছে পুলিশের একটি চেকপোস্ট এবং আশুলিয়া থেকে আব্দুল্লাহপুর মুখ হয়ে ঢাকাগামী প্রবেশ মুখে আরও একটি চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের টঙ্গী সেতুর ওপর দিয়ে যারা যানবাহনে যাচ্ছেন তাদের উত্তরার আজমপুরে পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে ।
শনিবার সকালের প্রথম প্রহর থেকেই এসব চৌকি বসিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ। আব্দুলাহপুর পুলিশ চেকপোষ্টের দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির ) উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) তাপস চন্দ্র শাহা বাংলানিউজকে বলেন, যারা কর্মজীবী বা চাকরিজীবী তাদের পরিচয় সনাক্ত হলে রাজধানীতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও এই পথে আসা যানবাহনগুলো তল্লাশি করে দেখা হচ্ছে। রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ তাই কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিত যাতে দুষ্কৃতিকারীরা সৃষ্ট করতে না পারে সেজন্য তল্লাশি করা হচ্ছে।
কী কী তল্লাশি করা হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মূলত ঢাকায় যাওয়ার কারণ জানতে চাচ্ছি, উদ্দেশ্য কী, যদি পথচারীরা উদ্দেশ্য এবং কারণ সঠিকভাবে বলতে পারেন তাহলে তাদেরকে যেতে দেওয়া হচ্ছে। আর যারা চাকরিজীবী তাদের প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র দেখলেই যেতে দেওয়া হচ্ছে। তাবে, যাদের সন্দেহভাজন মনে হচ্ছে তাদের বা যাদের কোনো পরিচয়পত্র নেই তাদের মোবাইল ফোন তল্লাশি করে দেখা হচ্ছে। মোবাইল ফোনে কোনো ধরনের উস্কানিমূলক ছবি বা ভিডিও রয়েছে কিনা। যদি না থাকে তাহলে যেতে দেওয়া হচ্ছে। আর যদি এমন কিছু পাওয়া যায় তাহলে তাদের পরিচয় সনাক্ত করতে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে সকাল থেকেই গণপরিবহন না থাকায় গাজীপুর টঙ্গী থেকে আগত যাত্রী-পথচারীরা পায়ে হেটেই ঢাকায় প্রবেশ করছেন। ঢাকার বাইরে থেকে কোন গণপরিবহন রাজধানীর ভেতরে ঢুকছে না। এদিকে আব্দুল্লাহপুর থেকে সিটির অভ্যন্তরীণ গণপরিবহনগুলো চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়াও আব্দুল্লাহপুর স্ট্যান্ডে অসংখ্য সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করতেও দেখা গেছে। যাদের মোটরসাইকেল আছে তারাও তল্লাশির মধ্য দিয়ে রাজধানীতে ঢুকতে পারছেন।
এদিকে আব্দুল্লাহপুর মোড়ে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে র্যাব সদস্যরাও। কিছুক্ষণ পরপরই র্যাবের টিম টহল দিচ্ছে। এদিকে পুলিশের পিকআপ ভ্যানও আব্দুল্লাহপুর মোড় থেকে হাউজবিল্ডিং-উত্তরা এলাকার অলিগলিতে টহলে নিয়োজিত রয়েছে।
>>> আরও পড়ুন: কারাগারে আব্বাস-ফখরুল-রিজভী কোয়ারেন্টিনে
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড