ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে ঘরে বসেই অনলাইনে মিলছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সেবা কার্যক্রম।
ফলে স্বল্প জনবলেও রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে ১.০৮ গুণ।
বিআরটিএ ময়মনসিংহ সার্কেল সূত্র জানায়, বর্তমানে এ সংস্থার নিবন্ধিত মোটরযানের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৭৩টি। সেই সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী মোটরযানচালকের সংখ্যা ৫০ হাজার। এর মধ্যে ২০২১ সালের পরে বিআরটিএ’র নিবন্ধিত মোটরযানের সংখ্যা বেড়েছে ১.৩৪ গুণ।
তবে নিবন্ধিত ৭ হাজার ৯১টি গাড়ি এখন অবৈধ চালকদের হাতে চলছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় দ্রুত অবৈধ চালকদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিএ ময়মনসিংহের বিভাগীয় উপ-পরিচালক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির সংকট কাটিয়ে ২০২১ সালে বিআরটিএ ময়মনসিংহ সার্কেলের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ১২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। তবে ২০২২ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১.০৮ গুণ। এ হিসাবে চলতি বছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শতভাগ ডিজিটাল টেকসই ও আধুনিক সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে সংস্থাটি। ফলে ঘরে বসেই অনলাইনে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই মিলছে সেবা।
রাইসুল আহম্মেদসহ একাধিক সেবাপ্রার্থী জানান, বিগত দুই বছর আগেও বিআরটিএ সার্কেল অফিসে সশরীরে এসে প্রত্যাশিত সেবার তথ্যাদি সংগ্রহ করে ম্যানুয়াল আবেদন দাখিল করে সেবা নিতে হতো। এতে গ্রাহকদের যাতায়াত বাবদ অতিরিক্ত অর্থ ও সময় নষ্ট হতো। সেই সঙ্গে দালালদের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত অর্থ লেনদেনে বাধ্য হতেন সেবাপ্রার্থীরা।
কিন্তু বর্তমানে বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালের (বিএসপি) মাধ্যমে ঘরে বসেই শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন দাখিল ও প্রিন্ট করা এবং মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করা সম্ভব। এর ফলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মোটরযান মালিকরা মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে অগ্রিম আয়কর, ফিটনেস ও ট্যাক্স টোকেনের বৈধতার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া এবং ফি’র পরিমাণ জানতে পারছেন।
সেই সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোটরযানের বিভিন্ন কর ও ফি জমা দেওয়া সহজ হয়েছে। এতে সাধারণ গ্রাহকরা ঘরে বসেই সেবা নিতে পারছেন। এছাড়া মোবাইল ফোনের মেসেজের (এসএমএস) মাধ্যমে গ্রাহকরা ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের বায়োমেট্রিক ও সার্টিফিকেট সংগ্রহের তথ্য, নাম্বারপ্লেট ও ট্যাগ প্রস্তুত সংক্রান্ত তথ্য জানা যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন একাধিক সেবাপ্রার্থী।
মোটরযানের ফিটনেস কার্যক্রমে সময়ক্ষেপণ এড়াতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ব্যবস্থা সচল রাখা হয়েছে উল্লেখ করে বিআরটিএ কর্মকর্তারা আরও জানান, যে কোনো মোটরকার, জিপ ও মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে তৈরির সাল থেকে পাঁচ বছর এবং পরবর্তী প্রতি দুই বছর পর পর ফিটনেস নবায়নের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক এস এম ওয়াজেদ হোসেন বলেন, কাজে গতি এনে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে স্টাফদের বায়োমেট্রিক উপস্থিতি সিস্টেম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা স্বচ্ছ ও হয়রানিমুক্ত করে ওই দিনই রেজাল্ট দেওয়ার কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ফলে পরীক্ষা শেষে ফলাফল ওই দিনই বিআরটিএ আই এস সিস্টেমে এন্ট্রি হচ্ছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শক মো. খবিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বর্তমানে এ সার্কেল কার্যালয়ে মোট জনবল রয়েছে নয়জন। এর মধ্যে একটি পদ সৃজনকৃত। তবে চাহিদার তুলনায় এ জনবল অল্প হলেও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সেবাপ্রার্থীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
এসআই