ঢাকা: বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সূর্যসন্তান উল্লেখ করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ কোনো কিছু দিয়েই শোধ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়ানো থেকে শুরু করে অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় বহুগুণে বাড়িয়েছে।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে পিলখানার সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ দরবার, পদক ও পুরস্কার বিতরণ এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বয়স বিবেচনা করে এবং আসা যাওয়ার সুবিধার্থে এবার সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অঞ্চল ভিত্তিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার চাকরির ক্ষেত্রেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং তাদের উত্তরসূরীদের অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। একইভাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে চাকরির ক্ষেত্রেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার এবং উত্তরসূরীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সংবর্ধনা শেষে বিজিবি মহাপরিচালক বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশ নেন। এ সময় সেখানে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক সবাইকে বিজিবি দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিজিবি দিবস কুচকাওয়াজসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। একই সঙ্গে ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বিজিবি'র বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। দরবারে বিজিবি মহাপরিচালক প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা কার্যক্রম, পারস্পরিক যোগাযোগ এবং খেলাধুলা ও শারীরিক উৎকর্ষতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
বছরজুড়ে বিজিবির অভিযানিক সফলতাসহ অন্যান্য প্রশাসনিক বিভিন্ন বিষয়, খেলাধুলায় সাফল্য, সৈনিকদের কল্যাণে গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম ইত্যাদির পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বর্তমান সরকারের সানুগ্রহ পৃষ্ঠপোষকতায় সৈনিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক সব স্তরের বিজিবি সদস্যদের শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে নিজেকে দূরে রেখে পারিবারিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার নির্দেশনা দেন।
দরবার শেষে বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ এবং কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ কর্মকর্তাসহ মোট ৫৬ জন বিজিবি সদস্য এবং অসামরিক কর্মকর্তা/ কর্মচারীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ মেডেল (বিজিবিএম), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ মেডেল সেবা (বিজিবিএমএস), প্রেসিডেন্ট বর্ডার গার্ড মেডেল (পিবিজিএম), প্রেসিডেন্ট বর্ডার গার্ড মেডেল সেবা (পিবিজি এমএস) এবং বর্ডার গার্ড অবদান মেডেল (বিজিওএম) এই পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পদক দেওয়া হয়। এরপর অপারেশনাল কর্মকাণ্ড, চোরাচালান নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ কোম্পানি/বিওপি কমান্ডার, শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষক/প্রশিক্ষণে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনকারী সর্বমোট ৩২ জনকে ব্যক্তিগত পুরস্কার দেওয়া হয়। একই সঙ্গে চারটি শ্রেষ্ঠ ব্যাটালিয়নকে ট্রফি দেওয়া হয়। এরপর ৬৪ জনকে মহাপরিচালকের অপারেশনাল ও প্রশাসনিক প্রশংসাপত্র (ইনসিগনিয়াসহ) দেওয়া হয়। এ অনুষ্ঠানে চারজনকে অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারী সহকারী পরিচালক ও চারজনকে অনারারী সহকারী পরিচালক থেকে অনারারী উপপরিচালক পদে পদোন্নতি দিয়ে তাদের র্যাংক ব্যাজ পরানো হয়।
এছাড়াও সারাদেশে বিজিবি'র খেতাবপ্রাপ্ত ১১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারদের সংবর্ধনা, অনুদান ও উপহার দেওয়া হয়।
বিজিবি মহাপরিচালকের দরবারে সব রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ভিটিসি এর মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল। এছাড়াও সারাদেশের প্রত্যন্ত সীমান্তের ৪৫০টি বিওপি এমএস টিমস ও বিজিবি'র নিজস্ব রেডিও লিংকের মাধ্যমে দরবারে যুক্ত ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২২
এসজেএ/আরআইএস