ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সূর্যের দেখা মেলেনি ঈশ্বরদীতে, জেঁকে বসেছে শীত

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
সূর্যের দেখা মেলেনি ঈশ্বরদীতে, জেঁকে বসেছে শীত

পাবনা (ঈশ্বরদী): রাতভর ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন, দিনে হিমেল বাতাসে কনকনে ঠাণ্ডায় পাবনার ঈশ্বরদীতে শীত যেন জেঁকে বসেছে।  

মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও কুয়াশার কারণে ঈশ্বরদী উপজেলায় মেলেনি সূর্যের দেখা।

 

পৌষের মাঝামাঝি সময়ে প্রচণ্ড কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ার জন্য ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ, ছিন্নমূল-দারিদ্র-অসহায়রা। এসব অসহায়-ছিন্নমূল মানুষের জন্য সরকারি বরাদ্দ কম থাকাতে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করতে পারছেন না উপজেলা প্রশাসন।

এদিন ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল ঈশ্বরদী। ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ২টা বাঁজলেও ঘন কুয়াশার জন্য সূর্যের দেখা মেলেনি।  

এদিকে ব্যাপক ঠাণ্ডার কারণে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও দিনমজুর, নিম্ন আয়ের মানুষের মেলেনি কোনো কাজ।  

তবে চায়ের দোকানি থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা, সিএনজির চালকরা কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে কাজ-কর্ম করছেন। অন্যদিনের তুলনায় তাদের আয় কম।  

কেননা, প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। রাস্তায় মানুষের উপস্থিত একেবারেই কম। বছরের শুরুতেই  স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও অপ্রতুল। প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে বাস-ট্রেনসহ অন্যান্য যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরেধীরে। এসব বাহনে মানুষের উপস্থিতিও অনেক কম।  

ষাটোর্ধ্ব আফিল উদ্দিন। ঈশ্বরদী মালগুদাম ট্রাক স্ট্যান্ডের পণ্যবাহী বা মালবাহী গাড়িতে যে যত কাজ করবে, তার তত আয়। সারাদিন কাজ করে আয় হয় চার-পাঁচশো টাকা। কিন্তু আজ কোনো কাজই নেই! 

আক্ষেপ করে তিনি বাংলানিউজকে জানান, প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে ট্রাক স্ট্যান্ডে আসছে না। দুইদিন ধরে কাজ নাই! মালগুদামে লেবারের যে কাজ করি, এতে প্রতিদিন চাল, তরি-তরকারী কিনতে হয়। রোদ উঠলে, ট্রাক আসলে তবেই কাজ! কাজ-কর্ম না থাকার কারণে দুর্দিনই যাচ্ছে।  

ঈশ্বরদী জংশন কুলিদের সর্দার আবু সাঈদ বাংলানিউজকে জানান, ট্রেনযাত্রীর মালামাল টেনে আমাদের সংসার চলে। কিন্তু আজ প্রয়োজন ছাড়া ট্রেনে কেউ চড়ছেন না। কনকনে বাতাসের মধ্যে ট্রেনের উপস্থিতিও কম। ঈশ্বরদী স্টেশনে ৩০ জন দিনমজুর কুলি রয়েছে। এই কাজ ছাড়া তো আমরা আর কিছুই পারি না। এখান থেকেই যা আয় হয়, তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে।

এদিকে, ঈশ্বরদীতে ছিন্নমূল অসহায় শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগও অনেকটা বেড়েছে। শীতে বেশ কষ্ট হচ্ছে তাদের। দারিদ্র শীতার্ত মানুষগুলোর কাছে প্রচণ্ড শীতে তাদের কাছে থাকা শীতবস্ত্রটি গায়ে জড়িয়েই কোনোরকমে রেলস্টেশন-বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঝিম মেরে বসে থাকতে দেখা যায়।  

ঈশ্বরদী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বাংলানিউজকে জানান, পৌষের মাঝামাঝি সময়ে কয়েকদিন ধরেই ঈশ্বরদীতে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। আমরা সহযোগীতা যা পেয়েছি, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আবার সরকারি বরাদ্দ পেলে অসহায় শীতার্তদের সহযোগীতা করা হবে।  

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. নাজমুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, ঈশ্বরদী উপজেলায় সপ্তাহধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। পৌষের মাঝামাঝি সময়ে বাতাসের কারণে শীত জেঁকে বসেছে। আজ (৩ জানুয়ারী) সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।