ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে কঠোর হচ্ছেন কর্মকর্তারা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৩
গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে কঠোর হচ্ছেন কর্মকর্তারা

চাঁদপুর: গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৭ কোটি ৯৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এসব প্রকল্পের কাজ বর্তমানে চলমান।

 

চলতি জানুয়ারি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব প্রকল্পের কাজে জনপ্রতিনিধিদের অনিয়মের কারণে মাঠে নেমেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা। নিয়মানুসারে কাজ সঠিকভাবে হয়েছে কিনা সরেজমিন পরিদর্শন করা হচ্ছে।

চাঁদপুর জেলা ত্রাণ শাখার দেওয়া সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে চাঁদপুরের ৮ উপজেলার জন্য গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্প এসেছে ৮৮৪টি। গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার প্রকল্প (কাবিখা ও কাবিটা) ৬৫৭টি। অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) ৪৬৪টি। হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) প্রকল্প ১৯টি।

এসব কাজ শুরু হয়েছে ২০২২ সালের ২২ জুলাই। শেষ হওয়ার চলতি মাসের ৩০ তারিখে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের অর্থ বছরের এটি প্রথম পর্যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে কয়েকটি সড়ক সংস্কারের কাজ চলমান। আবার কয়েকটি কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে বাগাদী ইউনিয়নে সেচের জন্য খাল সংস্কার কাজে অনিয়ম দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজ।

এদিকে হাইমচর উপজেলার ২ নম্বর আলগী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মীর বাড়ির রাস্তা থেকে সোনা গাজী বাড়ি হয়ে শাহ আলম মিয়াজীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মাণ না করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলনের অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরী।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কাজের অনিয়ম দেখা দেওয়ায় নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা। সম্প্রতি জেলার শাহরাস্তি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সবুজ নিজেই পরিদর্শনে নামেন প্রকল্পের কাজ দেখার জন্য। তিনি একদিনেই উপজেলার চিতোষী পূর্ব, মেহেরদ দক্ষিণ ও রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শন করেন।

রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের বিজয়পুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, আমাদের ইউনিয়নের মূল পাকা সড়ক থেকে গ্রামে যাওয়ার জন্য সড়কটি খুবই খারাপ ছিল। বৃষ্টি এলে চলাফেরা খুবই কষ্ট হত। এখন মাটি কেটে সংস্কার করায় খুবই ভালো হয়েছে।

ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন জানান, বিজয়পুর সড়কটির মেরামত কাজ চলছে। এটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিজয়পুর, আহম্মদ নগর, প্রশন্নপুর, কুরকামতা, পটিকক্ষীরা, নাহারা, পরানপুর গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দা এবং স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধা হবে।

মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নের দারুনকরা ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, আমাদের খালপাড় এলাকার সড়কটি চলাচলের অযোগ্য ছিল। মাটি কেটে সংস্কার করায় এখন খুবই সুন্দর হয়েছে। গ্রামের কৃষকরা তাদের মালপত্র নিতে পারবে এবং ছোট যানবাহনও চলতে পারবে।

চিতোষী পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আলম বেলাল জানান, ইউনিয়নের কালোচোঁ গ্রামের মানিক মেম্বারের বাড়ি থেকে রাব্বানীর বাড়ির সামনে পর্যন্ত রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন চলাল করতে পারত না। আমরা মাটি কেটে সড়কটি ১৪ ফুট প্রশস্ত করেছি। খুব সহজে দু’টি অটোরিকশা যাতায়াত করতে পারবে এবং দুর্ঘটনাও কম হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সবুজ বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো, রাস্তা, মাঠ-ঘাট, রাস্তা সংলগ্ন পুকুর পাড়ের উন্নয়ন ও খাল খনন প্রকল্পের মাধ্যমে শাহরাস্তি উপজেলায় ১ হাজার ৯৬ জন শ্রমিক প্রতিদিন ৪শ’ টাকা মজুরি হারে ৪০ দিন কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। আমরা এসব কাজের নিয়মিত পরিদর্শন করছি।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের উপজেলার প্রকল্পগুলোর কাজ টেগ অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তদারকি করছেন। কোনো ধরনের অনিয়মের সংবাদ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।