ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৯ হাজার অভিযোগের ৯০১টি দুদকের অনুসন্ধানে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
১৯ হাজার অভিযোগের ৯০১টি দুদকের অনুসন্ধানে

প্রতিবছরই কাজের মূল্যায়ন করতে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিদায়ী বছরে (২০২২ সালে) অনুসন্ধান তদন্তের ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

দুদক থেকে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, গত এক বছর দুদকে ১৯ হাজার ৩৩৮টি অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষে ৯০১টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করেছে সংস্থাটি, যা মোট অভিযোগের ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

একই বছরে প্রাপ্ত অভিযোগের ৯৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ অনুসন্ধানের জন্য আমলেই নিতে পারেনি দুদক।

গত ছয় বছরে (২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত) দুদকে জমা পড়া অভিযোগ ও অনুসন্ধানের পরিসংখ্যান বলছে, এই অর্ধযুগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অভিযোগ জমা পড়েছে ২০২২ সালে। করোনা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে বছরটিতে। অনুসন্ধানের দিক থেকেও ছয় বছরের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংখ্যক অভিযোগ অনুসন্ধান করেছে সংস্থাটি।

দুদক সংশ্লিষ্টরা অনুসন্ধানের জন্য কম অভিযোগ গ্রহণ করার কারণ হিসেবে বলছেন, বেশিরভাগ অভিযোগ দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়নি।

তাদের মতে, মানিলন্ডারিং আইনে দুদকের এখতিয়ার সীমিত হওয়ায় অনুসন্ধানের জন্য সব গ্রহণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া অভিযোগের একটি বড় অংশ হয়ে থাকে ব্যক্তিগত শত্রুতা বা তুচ্ছ কারণে। দুদক বলছে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগরে ক্ষেত্রে কমিশনের এখতিয়ার না বাড়ালে দুদকের জন্য কাজ করা কঠিন।

অভিযোগের তুলনায় অনুসন্ধানের কম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক কমিশনার জহুরল হক বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম কথা হলো দুদকে যেসব অভিযোগ আসে, এর একটি বড় অংশ কমিশনের তফসিলভুক্ত না। অন্যদিকে বেনামে বা ভিত্তিহীন অভিযোগ আসে অনেক বেশি। সেগুলো আইডেন্টিফাই করা যায় না। অভিযোগ আসে বেনামে। কেউ কেউ শত্রুতা বসত অভিযোগ করেন। দুদকের প্রাথমিক বাছাইয়ে সেগুলোর সত্যতা মেলে না। এ কারণে অভিযোগের সংখ্যা বাড়লেও দুদক সেটি অনুসন্ধানের জন্য নিতে পারে না।

দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদনর তথ্য মতে, ২০২১ সালে সংস্থাটিতে অভিযোগ জমা পড়ে ১৪ হাজার ৭৮৯টি। অভিযোগ থেকে অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয় ৫৩৩টি, যা মোট প্রাপ্ত অভিযোগের ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৪৮৯টি অভিযোগ জমা পড়ে। অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয় ৮২২টি, যা মোট অভিযোগের ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম এটি।

একইভাবে ২০১৯ সালে ২১ হাজার ৩৭১টি অভিযোগ জমা পড়ে, যা গত ছয় বছরের সর্বোচ্চ। এই সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে, এক হাজার ৭১০টি। এটি মোট অভিযোগের ৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে অভিযোগ জমা পড়ে ১৬ হাজার ৬০৬টি, অনুসন্ধানের জন্য নেওয়া হয় এক হাজার ২৬৫টি (৭ দশমিক ৬১ শতাংশ) এবং ২০১৭ সালে অভিযোগ পড়ে ১৭ হাজার ৯৮৩টি। অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয় ৯৩৭টি (৫ দশমিক ২১ শতাংশ)।

২০২২ সালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সরাসরি অভিযোগ জমা পড়েছে ১১ হাজার ৭৯৬টি, যা মোট অভিযোগের ৬০ শতাংশ। সরকারি দপ্তর বা সংস্থা থেকে অভিযোগ এসেছে ৯৬৭টি, যা প্রাপ্ত অভিযোগের ৫ শতাংশ। বেসরকারি দপ্তর সংস্থা থেকে ৩৮৭টি (২ শতাংশ), পত্র পত্রিকা বা টেলিভিশনের প্রতিবেদন থেকে এক হাজার ৩৫৪টি (৭ শতাংশ), বিভাগীয় কার্যালয় থেকে এক হাজার ৫৪৭টি (৮ শতাংশ), এনফোর্সমেন্ট থেকে ৫৮০টি (৩ শতাংশ) ও অন্যান্য মাধ্যম থেকে ২ হাজার ৭০৭টি (১৪ শতাংশ) অভিযোগ এসেছে।

২০২২ সালে দুদক বিভিন্ন মামলায় আসামিদের ২ হাজার ৬৩২ কোটি ৪১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৩ টাকা জরিমানা করেছে। এই সময়ে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদালতের নির্দেশে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৯ হাজার ১৬৭ টাকা বাজেয়াপ্ত করে সংস্থাটি। এছাড়া গত এক বছরে ৫৮৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক কর কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
এসআর/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।