ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্ত পর্বে বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরি প্রার্থীরা তাদের নিয়োগের দাবি করেছেন। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান তারা।
এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত পর্বে বাদ পড়া প্রার্থী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মো. সাজ্জাদ হোসাইন সাজু। তিনি বলেন, সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর জনগোষ্ঠী বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? প্রতিবন্ধী মানুষরা অনগ্রসর জনগোষ্ঠীতে পড়ে কি না আমরা জানতে চাই রাষ্ট্রের কাছে। বিশেষ ব্যবস্থা বা কোটা পদ্ধতি পাওয়ার যোগ্যতা আসলে কাদের? যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা প্রকৃত কোটার দাবিদার হয়ে থাকে; তাহলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক পদে ২০২২ সালে নিয়োগে অন্যান্য কোটা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধী কোটা কেন সংরক্ষণ করা হলো না? পৃথিবীর কোন সভ্য রাষ্ট্রে প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ করা হয় না?
পারুল বেগম নামে নিয়োগ বঞ্চিত এক প্রার্থী বলেন, আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারী হয়েও এ নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলে বঞ্চিত হয়েছি। যেখানে নারী কোটা ৬০ শতাংশ ছিল।
লিখিত বক্তব্যে মো. রিজওয়ান নামে এক প্রার্থী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, নির্বাহী আদেশাবলী চলমান নিয়োগে অনুগ্রহপূর্বক আমাদের নিয়োগ দিলে প্রতিবন্ধী সমাজ চিরকৃতজ্ঞ থাকবে। আমরা শিক্ষক পদে সুনামের সাথে কাজ করতে পারি। ইতোমধ্যেই আমাদের ভাই বোনেরা তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং রাষ্ট্র এবং সরকার যদি আমাদের মতো অসহায় প্রতিবন্ধী মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল না হয় তাহলে আমরা আর কী করতে পারি? আমাদের দ্বারা তো রাস্তায় কঠোর আন্দোলন করে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা সম্ভব নয়। কারণ, আমরা দুর্বল জনগোষ্ঠী। আইন আর কর্তৃপক্ষের সহমর্মিতা আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত পর্বে বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরি প্রার্থীরা। মানববন্ধন শেষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপিও দেন তারা। এদিন রাজধানীর মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে চাকরি প্রার্থীরা মানববন্ধন করেন। উপস্থিত ছিলেন লিখিত পরীক্ষায় পাস করে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন তাঁরা। গাইবান্ধা, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও বরিশালের প্রার্থীরাও।
মানববন্ধন থেকে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়। বাদ পড়া প্রতিবন্ধী চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ না দেওয়া হলে ৮ জানুয়ারি অনশন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
এমএমআই/এমজে