ফরিদপুর: ফরিদপুরের মধুখালীতে তিন বছরের সন্তানকে ফেলে রেখে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছেন এক স্কুল শিক্ষকের স্ত্রী। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলার চার মাস পেরিয়ে গেলেও স্ত্রীর হদিস না পেয়ে এখনও ওই স্কুল শিক্ষক বিচারের আশায় বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বলে জানা যায়।
মামলার বিবরণ এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে মধুখালী উপজেলার আশাপুর গ্রামের ফরিদুজ্জামানের ছেলে স্কুল শিক্ষক মঞ্জুরুল আহসানের (৩০) সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বদিরুজ্জামান খানের তৃতীয় কন্যা বাবলী সুলতানার (২৩)। তাদের সংসারে ৩ বছরের একটা ছেলে সন্তান রয়েছে।
বিয়ের পর থেকেই বাবলী সুলতানা ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের আমিন মন্ডলের ছেলে ইব্রাহীম মন্ডলের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ স্বামী ও তার পরিবারের। তারা গোপনে বিভিন্ন স্থানে দেখা করতেন এবং মোবাইল ফোনে ও ইমোতে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন বলেও অভিযোগ স্কুল শিক্ষক মঞ্জুরুল আহসানের।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিন বছরের সন্তানকে ফেলে রেখে সহপাঠী মোহাইমিনুল ইসলামের সহযোগিতায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থসহ স্বামীর ঘর থেকে পালিয়ে যান বাবলী। স্বামী মঞ্জুরুল আহসান তাকে ঘরে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করতে থাকেন এবং ওই (১৪ অক্টোবর) রাতে তার শ্বশুরকে নিয়ে মধুখালী থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করেন।
পরেরদিন বাবলী সুলতানার ফোন কল লিস্টের সূত্র ধরে (তার মোবাইল সিমটি স্বামী মঞ্জুরুল আহসানের নামে নিবন্ধন করা) তার সহপাঠী মোহাইমিনুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাবলী সুলতানা তার পরকীয়া প্রেমিক ইব্রাহীম মন্ডলের কর্মস্থল চট্টগ্রামের একটি বাসায় অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে মোহাইমিনুলের মাধ্যমে ফোন করে তাদের একত্রে অবস্থানের প্রমাণও পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে বাবলী সুলতানার স্বামী স্কুল শিক্ষক মঞ্জুরুল আহসান ইব্রাহীম মন্ডলের কর্মস্থলের অফিস বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি মধুখালীর ৫নং আমলী আদালতে একটি মামলা রুজু করেন। যার নম্বর CR-381/22।
তবে অভিযোগ দায়েরের প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষক মঞ্জুরুল আহসান এখন বিচারের আশায় পুলিশ, সাংবাদিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
অভিযোগ করে স্কুল শিক্ষক মঞ্জুরুল আহসান বলেন, আমার সংসারটা এলোমেলো করে দিয়েছে ইব্রাহিম মন্ডল। আমি ওই ছেলের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে পরকীয়া প্রেমিক ইব্রাহিম মন্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অফিসের কাজে ব্যস্ত আছেন বলে জানান। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাইলেও তিনি আর যোগাযোগ করেননি।
তবে কথা হয় স্কুল শিক্ষক মঞ্জুরুল আহসানের স্ত্রী বাবলী সুলতানার সঙ্গে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমার স্বামী মঞ্জুরুল আহসান আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। তাইতো, তার নির্যাতন সইতে না পেরে তাদের বাড়ি থেকে পলায়ন করে আমার এক আত্মীয় ইব্রাহিম মন্ডলের বাসায় গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে আশ্রয় দিয়ে তো অপরাধ করেনি।
এছাড়াও স্বামীর বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা নেওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
এনএস