ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উত্ত্যক্ত-মারধর, বখাটেদের দৌরাত্ম্যে তটস্থ পরীক্ষার্থীর পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
উত্ত্যক্ত-মারধর, বখাটেদের দৌরাত্ম্যে তটস্থ পরীক্ষার্থীর পরিবার

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে এক দাখিল পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটে ও তাদের স্বজনদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন মরিয়ম বিবি (৮০) নামে ওই পরীক্ষার্থীর নানি। তিনি জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

এছাড়াও বখাটেদের ভয়ে গত কয়েক দিন ধরে মাদরাসায় যেতে পারছেনা ওই পরীক্ষার্থী (১৬)। এমনকি বাড়ির বাইরেও বের হতে পারছেনা তার পরিবার। এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।  

সম্প্রতি সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমটুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী ও তার মা সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।  

এর আগে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) ওই ছাত্রীর মা মো. সেলিম, আলী আহমেদ ও আমেনা বেগমসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অভিযুক্তরা ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নতুন তেওয়ারীগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার পরীক্ষার্থী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ওই শিক্ষার্থী। সঙ্গে ছিলেন তার বৃদ্ধা নানি মরিয়ম বিবি। এসময় আরিফ ও সুমন নামে দুই যুবক তাদের পথরোধ করেন। এতে বৃদ্ধা তাদের বাধা দেন। পরে অভিযুক্তরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে বৃদ্ধাকে মারধর করে আহত করেন। এ ঘটনায় কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিলে ফের মারধরের হুমকি দেন তারা। ঘটনার বিচারের জন্য শিক্ষার্থীর মা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এতে আরিফ, তার বাবা সেলিম, মা আমেনা বেগম, আলী আহমেদ, তার স্ত্রী কুলসুম বেগম ও সুমনকে অভিযুক্ত করা হয়।

মাদরাসা ছাত্রী বলেন, মাদরাসায় যাওয়া-আসার পথে আরিফ ও সুমন আমাকে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল কথা বলে। তারা একসঙ্গে মোটরসাইকেলে চলাফেরা করে। ২১ জানুয়ারি আমাকে উত্ত্যক্ত করলে আমার নানি বাধা দেন। এতে আরিফ ও সুমন আমার নানিকে মারধর করে। আমি নানিকে ছাড়াতে গেলে আমার ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেয়। এতে ভয়ে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। সামনে আমার পরীক্ষা, কিন্তু তাদের ভয়ে আমি মাদরাসায় যেতে পারছি না।  

শিক্ষার্থীর মা বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে গত দুদিন আমি বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। আমার মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাকেও দেখতে যেতে পারছি না। দোকানের সামনে অভিযুক্তরা জড়ো হয়ে থাকে। বের হলেই তারা আমাকে মারধর করার হুমকি দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আরিফ ও সুমনকে পাওয়া যায়নি। তবে আরিফের বাবা মো. সেলিম জানান, তার ছেলে স্থানীয় ফরাশগঞ্জ বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। ওই ছাত্রী তার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। বৃদ্ধা মরিয়মকেও তারা কেউ মারধর করেনি।

অভিযুক্ত আলী আহমেদ বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। অভিযোগকারী নারী মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। এর আগেও ওই নারী তাদেরকে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।  

মাদরাসা সুপার লোকমান আজম বলেন, গত ৩ দিন ধরে ওই ছাত্রী মাদরাসায় আসছে না। তবে কী কারণে আসছে না, তা জানা ছিল না। ধারণা করেছিলাম সে অসুস্থ।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া বলেন, ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনাটি প্রায় এক মাস আগে তার মা জানিয়েছিল। অভিযুক্ত সুমনকে আমি চিনি না। অপর অভিযুক্ত ফারুককে উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করা হয়েছে।  

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।