ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কৃষকের ক্ষেতে বিষ স্প্রে, নষ্ট ৪ বিঘা জমির গম!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
কৃষকের ক্ষেতে বিষ স্প্রে, নষ্ট ৪ বিঘা জমির গম!

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের দুর্গম চরাঞ্চলে পূর্ব বিরোধের জেরে আব্দুল কাদের নামে এক কৃষকের ৪ বিঘা জমির গম বিষ স্প্রে করে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। এতে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।

এ ঘটনায় ৫ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।  

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে যমুনা বিধৌত সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের সয়াশেখা এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- বড় কয়ড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে কৃষক আব্দুল কাদের ও তার ভাই সাইদুল ইসলামের নিজস্ব ৪ বিঘা জমিতে এ বছর গম বপন করেছিলেন। গমের চারা গজিয়ে এক-দেড় ফুট দৈর্ঘ্যের গাছও হয়েছে। এ অবস্থায় গত রোববার (২২ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে বড়হর গ্রামের শফিউল ইসলাম ওরফে শফি, সাইফুল শেখ, সোহেল শেখ, সবুজ শেখ ও সয়াশেখা গ্রামের আব্দুল মালেক সংঘবদ্ধভাবে এসে গম ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করে। এ সময় বাধা দিলেও তারা কর্ণপাত করেনি। বিষ প্রয়োগের ফলে পুরো ক্ষেতের গম আস্তে আস্তে মরে যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী বৃদ্ধ মহির উদ্দিন, আল মাহমুদ, আকলিমা, হাসিবুল ইসলাম, আব্দুল মান্নানসহ অনেকেই বলেন, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শফি গংরা এসে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে বিষ প্রয়োগ করে ক্ষেতে। ওই সময় বাড়িতে পুরুষ না থাকার সুযোগে তারা এমন কর্মকাণ্ড করেছে।  

ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল কাদের ও সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা দুই ভাই নিজেদের কিছু জমি আর বর্গাচাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করি। ওই চার বিঘা জমিই আমাদের নিজস্ব সম্বল। ক্ষেত জুড়ে গম বুনেছিলাম। কিন্তু বিষ দিয়ে সব গমই মেরে ফেলা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই গমগুলো মাটিতে শুয়ে পড়বে। এতে অন্তত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।  

তারা আরও বলেন, দু বছর আগে পাকা গম কেটে জমিতে স্তূপ করে রেখেছিলাম। সেসময় একই গ্রুপের লোকজন গমের স্তূপে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। গত বছরও ক্ষেতের সরিষা পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায়ও মামলা চলছে। বর্তমানে সিআইডি মামলার তদন্ত করছে। মূলত আমাদের ওপর অত্যাচার করে সরিয়ে দিয়ে জমিটা দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে শফিউল ইসলাম শফি গংরা।  

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বিষ প্রয়োগে গম নষ্ট করার ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।  

কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী বলেন, বিষয়টি থানা থেকে ফোন করে আমাকে জানিয়েছে। আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছি।  

সিআইডির পরিদর্শক ওহেদুজ্জামান বলেন, গত বছরের সয়াশেখা চরের সরিষা ক্ষেত পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় একটি মামলা আমার হাতে রয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।