ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গরু চুরির অপবাদ দিয়ে কৃষককে অমানবিক নির্যাতন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
গরু চুরির অপবাদ দিয়ে কৃষককে অমানবিক নির্যাতন প্রতীকী ছবি।

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার মদন উপজেলায় গরু চুরির অপবাদে এক কৃষককে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

নির্যাতনকারীদের হাত থেকে ওই কৃষককে উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা।

 

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বনতিয়শ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  

স্থানীয় লোকজন ও আহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে বনতিয়শ্রী গ্রামের ইঞ্জিন খানের ছেলে জাহাঙ্গীর খানের গোয়াল ঘর থেকে একটি গরু চুরি হয়। এই ঘটনায় ওই কৃষককে সন্দেহ করেন জাহাঙ্গীর। বুধবার সকালে ওই গ্রামের রতন মিয়ার দোকানের সামনে থেকে জাহাঙ্গীর তার লোকজন নিয়ে ওই কৃষককে ধরে নিয়ে যায়। পরে গরু চুরির অপবাদে শিকলে বেঁধে দিনভর তার ওপর নির্যাতন করা হয়।  

গরু চুরির ঘটনায় ওই কৃষকের কোনো সম্পৃক্তা না পাওয়ায় স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তাকে রাতে উদ্ধার করেন স্বজনরা। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
   
ওই কৃষক বলেন, ‘আমি বুধবার সকালে বাড়ির সামনে দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ জাহাঙ্গীর কয়েকজন লোক নিয়ে এসে আমাকে ধরে তাদের বাড়িতে নিয়ে শিকলে বেঁধে রাখেন। পরে জাহাঙ্গীর, আহাদ, পারভেজ, হারুনসহ কয়েকজন আমাকে মারধর শুরু করেন। আমি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কয়েকবার অজ্ঞান হয়েছি। জাহাঙ্গীরের গরু আমি নিয়েছি একথা স্বীকার করার জন্য আমাকে এমন নির্যাতন করেছেন। কিন্তু গরু চুরির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ’

ওই কৃষকের স্ত্রী শামছুন্নাহার বলেন, ‘আমার স্বামী চুরি করেননি। কিন্তু তারা আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করেছেন। লজ্জায় আমার সন্তানরা ঘর থেকে বের হচ্ছে না। আমার স্বামীর অবস্থা খুবই খারাপ তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তাদের ভয়ে থানায় যেতেও সাহস পাচ্ছি না। আমরা কি এ ঘটনার বিচার পাবো না? এসব বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ’

ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সামিউল হায়দার তালুকদার সফি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘চুরির অপবাধে ওই কৃষককে মারধর করা হয়েছে আমি শুনেছি। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছেন। ’

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান জানান, ‘গরু চুরির অপবাধে নির্যাতন করার ঘটনাটি আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।