ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চিরায়ত যানজটে নাকাল যাত্রীরা

১৫ বছরে ঢাকায় সড়কের গতি কমেছে ঘণ্টায় ১৬ কি.মি.

মাসুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩
১৫ বছরে ঢাকায় সড়কের গতি কমেছে ঘণ্টায় ১৬ কি.মি. রাজধানীতে যানজট নিত্যদিনের চিত্র -ছবি: জিএম মুজিবুর রহমান

ঢাকা: গত ১৫ বছরে রাজধানী ঢাকার সড়কে যানবাহন চলাচলের গড় গতি কমেছে ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটারের মতো। যা ২০০৭ সালে ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এআরআইয়ের এক গবেষণা এই তথ্য উঠে এসেছে।

এতে বলা হয়, বর্তমানে ঢাকায় যানজটের কারণে দৈনিক প্রায় ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। অর্থমূল্যে যা প্রায় ১৩৯ কোটি টাকার সমান। এ হিসাবে বছরে যানজটে ক্ষতির পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

এআরআইয়ের গবেষণা আরও বলছে, ২০০৭ সালে ঢাকার সড়কে যানবাহনের গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারে। অর্থাৎ ১৫ বছরে ঢাকায় যানবাহন চলাচলের গড় গতি কমেছে ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটারের মতো।

যানজটের এই সমস্যার জন্য শৃঙ্খলা না মেনে গাড়ি চালানো, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যস্ত সড়কে মেগা প্রকল্পগুলোর কালক্ষেপণ, ইচ্ছেমত যানবাহন নিবন্ধন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিজ্ঞানভিত্তিক ও আধুনিক পদ্ধতির অভাবসহ বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো সমাধান করা গেলে তবেই সড়কে গতি ফিরবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। যানজট রাজধানীর নিত্যদিনের ঘটনা হলেও রোববার এলে সেই ভোগান্তি যেন আরও বাড়ে।

শুক্র এবং শনিবার অনেক প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক থাকায় বন্ধ থাকায় রোববার সড়কে চাপ থাকে পরিবহন ও যাত্রীদের। রোববার রাজধানীর মহাখালী, বনানী ও এয়ারপোর্ট এলাকা ঘুরে ও বিভিন্ন এলাকার যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

এদিন সকালে অফিস ও কর্মমুখী মানুষ খুব বেশি যানজটে না পড়লেও বিকেলে ফিরতি পথে এই ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকেই।

উত্তরা ৩ নং সেক্টর এলাকায় থাকেন আশিকুজ্জামান। বনানীতে একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের রিজার্ভেশনে চাকরি করেন। সকালে সময় মতো আসতে পারলেও বিকেল ৩টায় অফিস থেকে বের হয়ে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত খিলক্ষেত পৌঁছাতে পারেননি তিনি।

জানতে চাইলে আশিক বাংলানিউজকে বলেন, যানজট আসলে নিত্যদিনের ঘটনা। কিন্তু রোববারে সেই চাপ আরও  বেশি থাকে, বিশেষ করে বিমানবন্দর সড়কে।

ফরহাদ আহমেদ নামে আরেকজন বাংলানিউজকে বলেন, নিজের ব্যাক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়েও ১ ঘণ্টা ধরে মহাখালীর আমতলী এলাকায় যানজটে আটকে ছিলেন। রাস্তায় বের হলে সবারই অনেক তাড়া থাকে। কেউ লাইন মেনে চলতে চায় না। যাব মিরপুর, বিজয় স্মরণিতে যানজট থাকলে তো আর কথাই নেই। বিরক্ত হই, কষ্ট হয়, সময়ও নষ্ট হয়, কিন্তু কিছুই করার নেই।

মিরপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেসের বাসচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, মিরপুরে ইসিবি চত্ত্বর থেকে যানজট শুরু হয়, এদিকে আবার এয়ারপোর্ট সড়কে ঢুকলে যানজটে বসে থাকতে হয়। আমাদের ভাই জীবনটাই গাড়িতে কেটে গেল। কী আর করা! যানজট জীবনেও যাবে না ঢাকা থেকে।

মোটামুটি একই চিত্র অন্যান্য এলাকাগুলোতেও। সায়েদাবাদ থেকে গুলিস্তান, বিমানবন্দর সড়ক, মিরপুর থেকে গাজীপুর রুটেও যানজট রয়েছে বলে বাংলানিউজকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩
এমকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।