গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে মাধ্যমিকের সাড়ে ১১ হাজার বই চুরির ঘটনায় শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মণ্ডলসহ জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঝাড়ুসহ বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়।
মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুরাতন উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা বই চুরির ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসন মণ্ডলকে দায়ী করে তার ছবি সম্বলিত পোস্টার ঝাড়ু দিয়ে পেটানোর পর আগুন ধরিয়ে দেয়।
এরপর সেখানেই প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বই চুরির ঘটনায় মাধ্যমিক অফিসের অফিস সহায়ক মাজেদুর রহমানসহ তিনজনের নামোল্লেখ করে মামলার ঘটনাটি নাটকীয় দাবি করেন।
বক্তাদের অভিযোগ, বই চুরির এ ঘটনায় শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মণ্ডল পরোক্ষভাবে জড়িত। তার পরিকল্পনায় এসব বই চুরির ঘটনা ঘটলেও দায় এড়াতে উল্টো তিনিই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। সুন্দরগঞ্জে শুধু এবারেই সরকারি বই চুরির ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে ২০১৭ সালেও সরকারি বই চুরির ঘটনায় মাহমুদ হোসেন বাদী হয়ে মামলা করলেও পরবর্তীতে রফাদফায় জড়িতরা পার পেয়ে যায়।
বক্তারা আরও বলেন, ২০১৩ সালে যোগদানের পর থেকে মাহমুদ হোসেন নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন। তার এসব দুর্নীতির ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষক-অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ। অবিলম্বে বক্তারা উচ্চতর তদন্ত করে বই চুরির ঘটনায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেনকে মামলায় অর্ন্তভুক্ত করে গ্রেফতারের পাশাপাশি চাকরি থেকে অপসারণের দাবি জানান। অন্যথায় আগামীতে আরও বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
ঘণ্টাবাপী সভায় বক্তব্য রাখেন সুন্দরগঞ্জ সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি প্রভাষক মাসুদুর রহমান প্রামাণিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাজেদুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গোলাম কবির মুকুল, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম আহসান হাবীব মাসুদ, উপজেলা জাসদের সাবেক সভাপতি মুসলিম আলী মাস্টার, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সভাপতি বীরেন সরকার মিন্টু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসানুল করিম চাঁদ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক রতন মিয়া ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক সুমন মিয়া প্রমুখ।
১৫ জানুয়ারি রাতে সুন্দরগঞ্জ থেকে পাচার করা ট্রাকভর্তি বইগুলো আটক করে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পশ্চিম থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ট্রাকচালক শ্যামল, তার ভাই রাসেল ও অফিস সহায়ক মাজেদুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাচার করা ট্রাকভর্তি প্রায় সাড়ে ১১ হাজার বইয়ের অনুমানিক বাজারমূল্য পাঁচ লাখ টাকা। মাধ্যমিক পর্যায়ের ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীর এসব বই বিনামূল্যে বিতরণের জন্য সুন্দরগঞ্জ ডিড রাইটার (ডি ডব্লিউ) সরকারি কলেজে মজুদ ছিল।
এ ঘটনায় পরদিন সোমবার দুপুরে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মণ্ডল। মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩
এএটি