পিরোজপুর: পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে সাঈদখালী খালে বাঁধ দেওয়ায় স্থানীয় পাঁচ গ্রামের মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। গত তিন বছর ধরে ওই খালের এক দিকে বাঁধ দিয়ে রাখা হয়েছে।
তিন বছর ধরে এমন অবস্থা চললেও এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। এখন বাঁধটি ইন্দুরকানী, কালাইয়া, ঢেপসাবুনিয়া, সাউদখালী ও ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালের উত্তর দিকে উত্তর ইন্দুরকানী গ্রামে বলেশ্বর নদী এবং দক্ষিণ দিকে কালাইয়া ও সাউদখালী গ্রামের মধ্যে দিয়ে কচা নদী প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু খালের দক্ষিণ প্রান্তের কচা নদী থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি সেতু নির্মাণের অযুহাতে গত ২০১৯ সালের শেষের দিকে সেখানে বাঁধ দেওয়া হয়। এতে দক্ষিণ দিকে পানি চলাচলসহ স্থানীয়দের যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়ে। এর ফলে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, মাঝির খাল ও কালাইয়ার খালসহ তিনটি শাখা খালের পানি উত্তর ইন্দুরকানী খাল দিয়ে বলেশ্বর নদীতে নামে। এতে খালের দুই পাশে ভাঙন দেখা দেওয়ায় রাস্তা, বাগান ও ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে পানির স্রোতের কারণে খালটি আট থেকে দশ ফুট গভীর হয়ে গেছে। বাঁধ কেটে দিলে দুইদিক থেকে পানি নামার সুযোগ থাকতো এবং দুই পাশের মানুষই সুবিধা পেত।
উপজেলার দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খালে বিশাল আকারে বাঁধ দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও গত এক বছর ধরে তার কাজ বন্ধ আছে। আর বাঁধের দক্ষিণ দিকটা ভরাট হয়ে গেছে।
বাঁধের পাশের দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এখানে অকারণে একটি বাঁধ থাকায় আমরা শুকনা মৌসুমে পানি পাই না। আবার বর্ষা মৌসুমে পানি নামতে না পারায় স্থানীয় বাড়ি-ঘরে পানি জমে যায়।
খালের উত্তর প্রান্তের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ মাতুব্বর জানান, খালের দক্ষিণ দিকে বাঁধ দেওয়ার কারণে তিনটি শাখা খালের পানি এক দিক দিয়ে নামে। এতে পানির স্রোতের কারণে চার কিলোমিটার রাস্তা খালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত খালের বাঁধ কাটাসহ উত্তর দিকে স্লুইজ গেট দেওয়া প্রয়োজন।
ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ করীম ইমন তালুকদার জানান, খালে বাঁধ থাকায় একদিক দিয়ে পানি নামছে। এতে রাস্তঘাট ভেঙে যাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ আসলে খালের উত্তর প্রান্তে স্লুইজ গেট ও দক্ষিণ প্রান্ত খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা এলজিইডির উপ-প্রকৌশলী রবীন্দ্রনাথ হালদার জানান, ওই খালের দক্ষিণ দিকের সেতুর কাজ বন্ধ আছে। তাই জনসাধারণের সুবিধার্থে বাঁধ ছোট করে কেটে দিলে পানি উঠতে নামতে পারবে। এলাকাবাসী নিজেরা চাইলেও বাঁধ কেটে নিতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৩
এফআর