নীলফামারী: ১৮ মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৪৪ মাসেও শেষ হয়নি নীলফামারীর কুমারগাড়ী দাখিল মাদরাসার নতুন ভবন নির্মাণ।
শ্রেণিকক্ষের অভাবে এখন খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। তবে বরাদ্দের অভাবে কাজ বন্ধ রয়েছে বলে দাবি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর।
সরেজমিন দেখা গেছে, শ্রেণিকক্ষ না থাকায় খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। নির্মাণাধীন ভবনের দুই পাশে শিডিউল করে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শুরু হয় নীলফামারীর সৈয়দপুরের কুমারগাড়ী দাখিল মাদরাসার নতুন চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজ। কার্যাদেশ অনুযায়ী পরের বছর ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও হয়নি প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ। বাধ্য হয়ে মাঠেই নিতে হচ্ছে ক্লাস। রোদ-বৃষ্টি, এমনকি চলতি মৌসুমের তীব্র শীতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। মাদরাসাটির পুরোনো ভবনটিও জরাজীর্ণ।
প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র রুবেল ইসলাম, লামিয়া আক্তার, নবম শ্রেণির ছাত্রী আফিবা আক্তার, লানু আক্তার ও সুমন ইসলাম জানায়, শ্রেণিকক্ষের অভাবে ও জরাজীর্ণ ভবনের কারণে চরম কষ্টে তাদের পড়ালেখা চলছে। শীত, ঝড়-বৃষ্টির কারণে তাদের নিয়মিত পড়াশোনা ব্যাহত হয়।
মাদরাসার শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, আমিনুল ইসলাম ও রিনা আক্তার বলেন, আমরা যেভাবে পাঠদান অব্যাহত রেখেছি, তা একেবারেই অমানবিক। শ্রেণিকক্ষের অভাবে এক রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস নেওয়া ছাড়াও খোলা আকাশের নিচে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিতে হচ্ছে।
কুমারগাড়ী দাখিল মাদরাসা সুপার মোছা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেওয়া হলেও তারা নির্মাণ কাজ শেষ করছে না। এছাড়া এ ব্যাপারে আমরা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর নীলফামারীর প্রধান প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিযেছি। ১৮ মাসের কাজ শেষ হয়নি ৪৪ মাসেও। এ বিষয় বরাদ্দ সংকট ও নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিকে কারণ বলে জানায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বরাদ্দ সংকট ও নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। তবে বরাদ্দ পেলেই দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করব।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শাহীনূর ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
তবে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি ও বরাদ্দের অভাবের কথা স্বীকার করেন তিনি। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। বর্তমানে মাদরাসাটিতে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন ১৩ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
এসআই