ভোলা: দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট। এ রুটে অসংখ্য ডুবোচর জেগে ওঠায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রী ও নৌযান শ্রমিকরা।
এ রুটে নৌযান চলাচলে ব্যাপক বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ২৩ কিলোমিটার এ পথে ৮/১০টি ডুবোচর জেগে ওঠায় তিন ঘণ্টার পথে যেতে সময় লাগছে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা।
নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে যেতে না পারায় প্রতিদিন সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ রুটের চলাচলকারী যাত্রী ও নৌযান শ্রমিকদের।
জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার সঙ্গে দ্বীপজেলা ভোলার নৌ পথে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট।
এ রুট দিয়ে প্রতিদিন পাঁচটি ফেরি ও ১০টি লঞ্চ চলাচল করে আসছে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে মেঘনার নাব্য সংকটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী-শ্রমিকদের। ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার নৌ পথের বিরিবির, লালবয়া, মতিরহাট, রহমতপুর, কাটাখালিসহ আটটি পয়েন্টে ডুবোচর জেগে ওঠায় ওই পয়েন্টে নৌযান চলাচল করতে পারছে না।
এতে আট কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে যেতে হয় নৌযানগুলোকে। ফলে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দুই/তিন ঘণ্টা বেশি লাগছে। যে কারণে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয় এ রুটের চলাচলকারী যাত্রীদের।
যাত্রী জয়িতা শংকর বলেন, শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে ডুবোচরের কারণে লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। আমাদের আসা যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, ড্রেজিং না করায় যাত্রীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।
এদিকে শুধু যাত্রী নয়, অতিরিক্ত সময়ের পাশাপাশি অতিরিক্ত তেল খরচ হচ্ছে নৌযানের, সে কারণে দ্রুত ড্রেজিংয়ের দাবি তুলেছেন নৌযান কর্তৃপক্ষ।
ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে চলাচলকারী কৃষানি ফেরির মাস্টার আতিকুর রহমান ও কলমিলতা ফেরির মাস্টার নৌযান শ্রমিক-মাস্টার মোবারক করিম বলেন, নদীতে অসংখ্য ডুবোচর। ২৩ কিলোমিটারের পথ এখন ৩১ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। এ রুটে ভাটার সময় পানি চার ফুটের বেশি থাকে না, তাই ফেরিগুলোতে ঘুরে যেতে হয়। এতে সময় বেশি লাগছে।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির মেরিন অফিসার মো. আল-আমিন বলেন, খুব দ্রুত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নৌযান স্বাভাবিক রাখতে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি। যে কারণে লঞ্চ ও ফেরিগুলোকে যাতায়াত করতে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি ভোলার দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক পারভেজ খান বলেন, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ রুটে এখন বড় সমস্যা ডুবোচর। তাই রুটটি স্বাভাবিক রাখতে ড্রেজিং জরুরি।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ড্রেজিং করে এ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এদিকে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাগবে খুব দ্রুত ড্রেজিং জরুরি বলে মনে করছেন এ অঞ্চলের যাত্রীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
আরএ