ঢাকা: বসন্তবরণ উৎসবে এসে কবিতা আবৃত্তি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। কবি শামসুর রাহমানের ‘পারবে কি রুখে দিতে’ শিরোনামের কবিতাটি আবৃত্তি করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন প্রফেশনাল ভবনে বসন্ত উৎসব ১৪২৯-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
“এ শহর, আমার এ জন্মশহর উঠেছে হেসে,
লেগেছে বাসন্তী রঙ তার
ধূসর সত্তায় আজ। কোকিলের কী ব্যাকুল ডাক
কবির হৃদয়ে নিমেষেই জাগায় কাঙ্ক্ষিত চিত্রকল্প, কোকিলের ডাক
উৎফুল্ল তরুণ তরুণীর প্রাণে আনে সুন্দর ও কল্যাণের
স্নিগ্ধ রূপ উৎসব-ছন্দিত এই বকুলতলায়। কোকিলের
গান নিবেদিত তানে শহীদ মিনারে
সশ্রদ্ধ ছড়ায় বসন্তের আভা, অগণিত ফুল।
আমিও কৃতজ্ঞতায় করেছি গ্রহণ
বসন্তের সানুরাগ দান জীবনে আমার আর
চেতনাকে প্রজ্বলিত রেখেছি সর্বদা
শুভবাদী আলোর শিখায়। জীবনের অস্তরাগে
যৌবনের পদধ্বনি আজও বারবার
আমাকে প্রবল টানে ঝড়ক্ষুব্ধ পথে,
আর হিংস্র হাওয়ায় আগলে রাখি দীপ,
সন্ত্রস্ত মাথায় নাচে ঘাতকের শাণিত কুড়াল।
কখনও নিইনি অস্ত্র হাতে; কোনও পাখি,
প্রজাপতি কিংবা কোনও কীটকেও
করিনি হনন কোনওদিন, অথচ আমার এই
প্রাণের পূর্ণিমা
দপ্ করে নেভাবার জন্যে তালেবানি অমাবস্যা ধেয়ে আসে।
এই যে রমনার মাঠে, বকুলতলায়
এখন রবীন্দ্রনাথ আর বিদ্রোহী কবির বসন্তের গান
আর কোকিলের কুহুতান ক্ষণে ক্ষণে জেগে ওঠে,
সে দীপ্ত আনন্দধ্বনি পারবে কি রুখে দিতে কবন্ধ সন্ত্রাস?
পারবে কি ভবিষ্যের কোনও সূর্যোদয়ে?”
শিক্ষামন্ত্রীর কবিতা আবৃত্তি শুনে মুহুর্মুহু হাত তালিতে ভরে ওঠে মিলনায়তন। এর পর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমাদের ষড় ঋতু আছে। আমাদের এই ঋতু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা যে বাঙালি—আমাদের সব ঋতুর জন্য গান আছে, কবিতা আছে, বিভিন্ন ঋতুর খাবার আছে, নানান ঋতুর নানান সাজ আছে। সব মিলিয়ে বারবার একেকটা ঋতু আসে, এবং আমাদের জানিয়ে দেয় যে, আমরা বাঙালি, আমাদের যে সংস্কৃতি তাকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। এতে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রিজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, শামা রহমান। কবিতা আবৃত্তি করেন প্রখ্যাত আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফা। এছাড়া কলেজ শিক্ষার্থীরা নৃত্য ও নাটক পরিবেশন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
এমকে/এমজেএফ