ঠাকুরগাঁও: কয়েকটি সিমেন্টের পিলারের ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে জরাজীর্ণ টিনের চালা৷ রাস্তা থেকে সেটির কাছে যেতে হলে পার হতে হয় কয়েকটি কবর। আর চারদিকে বিস্তৃত রয়েছে আবাদি জমি।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বেংরোল ফুটানিবাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।
বিদ্যালয়টির কোনো সাইনবোর্ড ও ভবন নেই। শুধু দেখা মিলে দশটি খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা টিনের চালা। তবে বাস্তবে বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব না থাকলেও প্রতিবছরে খাতা-কলমে চলমান শিক্ষাক্রম দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে পাঠ্যবই। বিদ্যালয়টির এমন অবস্থাতেও পাঠ্যপুস্তক দেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ও সচেতন মহল। বিদ্যালয়টির পাওয়া নতুন পাঠ্যবই বিক্রিরও অভিযোগ করেছেন অনেকে৷
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেংরোল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম বলেন, আমরা এবারে সব শ্রেণির ৫০ সেট বই পেয়েছি। সেগুলো আমাদের একজন শিক্ষকের বাসায় রেখেছি৷ আমরা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছি অনুমোদনের কিন্তু পাচ্ছি না৷ শিক্ষা অফিসের সব নির্দেশনা আমরা মেনে চলার চেষ্টা করি৷
নতুন পাঠ্যবইগুলো কি হয় এ প্রশ্নের জবাবে কোনো সদুত্তর না দিতে পেরে তিনি বলেন, সেগুলো আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে দিয়ে দেয়।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন, ২০০০ সালের দিকে আমরা প্রতিষ্ঠানটির কাজ শুরু করি। তারপর থেকে চেষ্টা চালিয়ে আসছি সরকারিকরণ করার। আশা রাখছি সামনে এটি সরকারি হবে। আর বইগুলো এলাকার যেকোনো শিক্ষার্থী চাইলে আমরা দেয় তাদের পড়াশোনা করার জন্য।
অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের সরকারি হওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মনসুর আহমেদ বলেন, বিষয়টি অবগত হলাম। কোনো শিক্ষার্থী না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তারা বই পেল সেটি তদন্ত করা হবে। সেই সঙ্গে তারা বই বিক্রি করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
আরএ