ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সেতু পেয়ে দুঃখ ঘুচলো দ্বীপবাসীর

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
সেতু পেয়ে দুঃখ ঘুচলো দ্বীপবাসীর

রাঙামাটি: আংশিক সমতল এবং কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে রাঙামাটি শহর গঠিত। কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টির পর দ্বীপগুলো গড়ে উঠেছে।

এসব দ্বীপে প্রায় কয়েক হাজার বসতি রয়েছে। মূল শহরের সঙ্গে দ্বীপের বাসিন্দাদের যোগাযোগের একমাত্র বাহন ইঞ্জিন চালিত বোট। যে কারণে দ্বীপ এলাকার বাসিন্দাদের দাবি ছিল, মূল শহরের সঙ্গে সহজে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের।  

বর্তমান সরকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে রাঙামাটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে শহরের হ্যাচারি দ্বীপ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দুঃখ ঘোচাতে কাপ্তাই হ্রদের ওপর কালিন্দীপুর-হ্যাচারি-সুখী নীলগঞ্জ সেতু স্থাপন করেছে। বর্তমানে এ সংযোগ সেতুটি এলাকার মানুষের মধ্যে গতি সঞ্চার করেছে।

রাঙামাটি শহরের হ্যাচারি এবং সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় হাজারের বেশি পরিবারের বসবাস। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পুলিশ লাইন, মিনি চিড়িয়াখানা এবং মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে এখানে। হ্যাচারি এবং সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় নির্মিত হতে যাচ্ছে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ভবন।

এক সময় নৌকাই (বোট) মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হলেও বর্তমানে নবনির্মিত সেতুটি এলাকার মানুষের যোগাযোগ, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সেতু পেয়ে অনেক খুশি এলাকাবাসী।

কালিন্দীপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হ্যাচারি এলাকার মানুষ নৌকায় করে মূল শহরে আসেন। নৌকা পার হতে গিয়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। অনেক সময় নৌকা পাওয়া যায় না। যে কারণে তাদের চরম বেগ পেতে হয়। সেতুটি হওয়াতে তাদের কষ্টের দিন শেষ হয়েছে।

হ্যাচারি এলাকার বাসিন্দা সবুর মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বহু বছর ধরে অনেক কষ্টে দিন কাটছি। নৌকা দিয়ে মূল শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা অত্যন্ত কঠিন। এছাড়া বউ-বাচ্চা অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা, বাচ্চাদের স্কুলে পড়ানো, সব কিছু কঠিন ছিল। বর্তমান সরকার আমাদের দিকে ফিরে দেখেছে। আমাদের দাবি মিটিয়েছে। সেতু করে দেওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৬ সালে কালিন্দিপুর-হ্যাচারি-সুখী নীলগঞ্জ সংযোগ সেতুর কাজ শুরু করা হয়। ২২৬ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৫.১ মিটার প্রস্থের এ সেতু তৈরিতে ব্যয় করা হয়েছে ১২ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

রাঙামাটি জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে নবনির্মিত সেতু দিয়ে হালকা যানবাহন এবং সাধারণ মানুষ যাতায়াত করছেন। সেতুর আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। কাজগুলো সম্পন্ন হলে দ্রুত উদ্বোধন করা হবে।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, টেকনিক্যাল বিভিন্ন সমস্যার কারণে সেতুটি এখনো সম্পূর্ণভাবে উন্মুক্ত করা হয়নি। নিয়ম অনুয়ায়ী কাজ শেষ হলে এবং চলাচলের উপযোগী হলে দ্রুতই উদ্বোধনের মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সেতুটি।

সংযোগ সেতুটি চালু হলে শহরের সঙ্গে হ্যাচারি- সুখী নীলগঞ্জ-কল্যাণপুর এলাকার হাজারো মানুষের যোগাযোগ অনেক সহজ হবে। পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা মানুষ তাদের চিকিৎসা সেবাও পাবেন খুব সহজে এবং প্রসারিত হবে এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য। এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।