কক্সবাজার: কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনের সী আলিফ নামের একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে মা ও শিশু সন্তানের মরদেহ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল সী আলিফ থেকে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের কক্সবাজার সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মিজানুর রহমান।
নিহতরা হলেন, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার নাথপুরা এলাকার শচীন্দ্র দের মেয়ে সোমা দে (৩৬) এবং তার আট মাস বয়সী এক মেয়ে শিশু সন্তান। ঘটনার পর থেকে অপর দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামী জেমিন বিশ্বাস পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হোটেল কর্তৃপক্ষের বরাতে মিজানুর রহমান বলেন, কক্সবাজার শহরের আবাসিক হোটেল সী আলিফের একটি কক্ষে দুই পর্যটকের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে হোটেলটির চতুর্থ তলার ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে মেঝে ও খাটের ওপর পড়ে থাকা অবস্থায় এক গৃহবধূ ও আনুমানিক আট মাস বয়সী এক মেয়ে শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়।
তিনি জানান, হোটেল কক্ষটির দরজা বাইরে থেকে খোলা অবস্থায় ছিল। নিহতদের শরীরে কোনো ধরণের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করে দুইজনকে হত্যার পর স্বামী পালিয়ে গেছেন। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, কি কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা, দাম্পত্য কলহের জেরে হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে।
হোটেল সী আলিফের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মোহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তিন শিশুসহ সুমা দে ও জেমিন বিশ্বাস হোটেলের ৪১১ নম্বর কক্ষে উঠেন। তারা ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হোটেল অবস্থানের কথা বলে কক্ষটি ভাড়া নেন।
তিনি আরও বলেন, বেলা সাড়ে ১১টায় হোটেল কক্ষটি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জেমিন বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে চেক আউট করতে হোটেলের এক কর্মচারী কক্ষটিতে যান। এ সময় বাইরে থেকে দরজা খোলা পেয়ে ভিতরে নারী ও শিশুকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে ঘটনার ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করা হয়।
হোটেলের ম্যানেজার জানান, তারা তিন শিশু সন্তানসহ হোটেল কক্ষে অবস্থান করলেও ঘটনার পর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান এএসপি মো. মিজানুর রহমান।
এদিকে ঘটনার পর কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ ছাড়াও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এবং টুরিস্ট পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩
এসবি/এসআইএ