ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

জুয়ার টাকার ঋণ পরিশোধ করতে নানিকে হত্যা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
জুয়ার টাকার ঋণ পরিশোধ করতে নানিকে হত্যা!

নারায়ণগঞ্জ: অনলাইন জুয়া ও লোনের কিস্তির টাকা জোগাতে নানিকে হত্যার ঘটনায় মো. রাকিবকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অনলাইন জুয়া ও ব্যাংক লোনের কিস্তির টাকা জোগাতে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুটের উদ্দেশ্যে নাটক সাজিয়ে নানি আয়শা বেগমকে (৬১) হত্যার নেপথ্যে ছিলেন রাকিব।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদী নাসরিন আক্তার তার টিনসেড বাড়িতে তিনিসহ তার মা, এক ছেলে ও দুই ছেলের স্ত্রী বসবাস করেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি তার বড় ছেলের স্ত্রী শান্তা ইসলাম (২৫) ও গত ১০ ফেব্রুয়ারি ছোট ছেলের স্ত্রী ছোঁয়া (২৩) নিজ নিজ পিত্রালয়ে বেড়াতে যান। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে তার মা আয়শা বেগম (৬১) সিদ্ধিরগঞ্জে তার ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে যান। ওই দিন বিকেলে তিনি ভাসুরের বাড়িতে যান। সেখান থেকে রাতে বাসায় ফিরে দেখেন গেটের সিটকিনি ভেতর থেকে লাগানো। তখন তিনি ধারণা করেন তার মা, ছোট ছেলে ও ভাড়াটিয়া গার্মেন্টসকর্মী খোরশেদা আক্তার বাসায় এসেছেন। তাদের ডাকা ডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে গেট খুলে ভেতরে ঢুকে দেখেন তার রুমের তালা খোলা ও দরজা ভেড়ানো এবং স্টিলের আলমারি খোলা। এ সময় তিনি মায়ের রুমে গিয়ে মাকে উপুর হয়ে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দেখেন তার মা মারা গেছেন। এ সময় তিনি বলেন, তার মায়ের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা চুরি হয়েছে।

নানা তথ্যপ্রযুক্তি সংগ্রহ করে পিবিআই জানতে পারে, আয়শার মেয়ে নাছরিনের ছেলে রাকিব এ ঘটনায় জড়িত। রাকিব ব্যাংক লোন নিয়ে অনলাইনে জুয়া খেলে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তার চলাফেরা উশৃঙ্খল প্রকৃতির। এ তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী টিমের সন্দেহ হলে রাকিবের কর্মস্থলে নিয়ে জানতে পারেন ঘটনার দিন রাকিব অনুপস্থিত ছিলেন। পরে পিবিআই গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাকিবকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সব স্বীকার করেন।

রাকিব স্বীকারোক্তিতে জানান, অনলাইনে জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়ে লোনের কিস্তি পরিশোধের জন্য নিজের বাসায় চুরি করার পরিকল্পনা করেন তিনি। ঘটনার দিন বাসায় কেউ থাকবে না সেটা আগেই জেনে তিনি তার কর্মস্থলে না গিয়ে গোপনে বাসার আশেপাশে অবস্থান করেন। পরে বিকেলে বাসা ফাঁকা পেয়ে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আলমারি ভেঙে অনুমানিক এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও নগদ ৩০০ টাকা চুরি করেন। এ সময় তার নানি আয়শা বাসায় চলে এলে তার কর্মকাণ্ড দেখে অবাক হয়ে তাকে থাপ্পড় দেন। এতে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে কাপড় পেঁচিয়ে পুরোনো গেঞ্জি দিয়ে নানিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে নানির স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা নিয়ে বাড়ির পেছনের দেয়াল টপকিয়ে পালিয়ে যান।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
এমআরপি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।