নেত্রকোনা: নেত্রকোনার কলমাকান্দা দুগার্পুরের সীমান্তবর্তী উপজেলার নৃ-গোষ্ঠীর হাজং সম্প্রাদায়ের নিজস্ব ভাষার কোনো পাঠ্যরুপ না থাকায় সেটি এখন ঝুকিতে রয়েছে। সেই ভাষাটি যাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য টিউশিউনির টাকা বাঁচিয়ে গ্রামে গ্রামে শিশুদের ভাষা চর্চা করিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র অন্তর হাজং।
দুগার্পরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের হাজংপাড়ার রহিন্দ্র হাজং এর ছেলে অন্তর হাজং। অতি দ্ররিদ্র পরিবারের তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ছোট। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ছোট থেকেই চিন্তা করে আসছেন, সমাজের মানুষের জন্য কিছু একটা করা দরকার। এমন চিন্তা থেকেই গত তিন বছর ধরে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে সেই টাকা দিয়ে তিনি হাজং ভাষার ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
অন্তর তার নিজ এলাকা হাজংপাড়া, গোপালপুর, লক্ষিপুর, বারমারি ও বিপিনগঞ্জসহ বিভিন্ন হাজং গ্রামে শিশু-কিশোরদের হাজং ভাষা চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন মহৎ উদ্যোগ দেখে তার মা-বাবাও অনেক খুশি।
পাহড়ি অধ্যুষিত জনপদ নেত্রকোনা দুগার্পুর কলমাকান্দা উপজেলা। শত শত বছর থেকে বাঙালিদের পাশাপাশি উপজাতিরা পাহাড় ও সমতল ভুমিতে বসবাস করে আসছেন। এই জনগোষ্টীর মধ্যে গারো, হাজং, কোজ, বানাই, ডালু, মান্দাইসহ বিভিন্ন সম্প্রাদায়ের মানুষ বসবাস করেন। এসব নৃ-গোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সামাজিক প্রথা, পোশাক-পরিচ্ছদ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। এগুলোর মধ্যে হাজং ভাষা ও সংস্কৃতি প্রায় হারিয়ে যেতে চলেছে। আর অন্তর তার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভাষাটি টিকিয়ে রাখতে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজিব উল আহসান বলেন, অন্তর হাজং তাদের নিজস্ব ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সেটি সত্যিই প্রশংসনীয়। তার এই কাজের জন্য কিছু প্রয়োজন হলে আমি তাকে অবশ্যই সহযোগীতা করার চেষ্টা করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
এফআর