যশোর: যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে তার শটগান দিয়ে প্রতিপক্ষের দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে।
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।
আ.লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম তার বেয়াই মাস্টার নুরুল ইসলামের পক্ষে দাঁড়িয়ে এ হামলার নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ।
হামলায় আহতরা হলেন - সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দা এবিএম জাফরী (৩৮) ও তার পিতা আসাদুজ্জামান (৬৫)।
পরদিন ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এ ঘটনা নিয়ে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আসাদুজ্জামান অভিযোগ করেন, ৩০ বছর আগে শিল্প ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে হামিদপুর গ্রামে দশ একর জমি কিনি। তখন থেকেই ওই জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস ও চাষাবাদ করে আসছি। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমি ও আমার ছেলেরা কলা গাছ রোপণ করতে যাই। জমিতে কলাগাছ রোপণের সময় হঠাৎ যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার নেতৃত্বে ১২-১৫জন সন্ত্রাসী চাইনিজ কুড়াল ও শটগান নিয়ে উপস্থিত হন। এ সময় শহিদুল ইসলাম মিলন ওই জমি তার বেয়াই নুরুল ইসলামের দাবি করে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করেন। বাধা দিতে গেলে শহিদুল ইসলাম মিলনের লোকজন আমার ও আমার ছেলে জাফরীকে শটগান দিয়ে পেটায়। জাফরীর মাথায় আঘাত করে তারা। এসময় আমি ও আমার ছেলে আহত হলে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর ওই জমিতে থাকা বিভিন্ন প্রকার ফলজ, বনজ ঔষধি গাছ কেটে সাবাড় করে দেয় শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার বাহিনী। ওই জমি দখলের জন্য হত্যারও হুমকি দিয়েছেন তারা। এ ঘটনায় গত ৭ ডিসেম্বর কোতয়ালি থানায় জিডি) করেছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সোমবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
তবে মারধরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন শহিদুল ইসলাম মিলনের বেয়াই মাস্টার নুরুল ইসলাম। তবে এ ঘটনায় তার বেয়াই শহিদুল ইসলাম মিলনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনার সময় শহিদুল ইসলাম মিলন উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি তার।
সোমবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন মাস্টার নুরুল ইসলাম। সেখানে আসাদুজ্জামান ও তার ছেলের বিরুদ্ধে উল্টো জমি দখলের অভিযোগ আনেন তিনি।
নুরুল ইসলামের আইনজীবী শাহরিয়ার বাবু বলেন, আমার মক্কেল নুরুল ইসলামের জমি দখল করতে যায় আসাদুজ্জামান ও তার লোকজন। এসময় জমির বৈধ মালিকরা বাধা দিলে এই ঘটনা ঘটে। আসাদুজ্জামান নিলামের মাধ্যমে কেনা জমির বাইরেও নুরুল ইসলামের প্রায় ৩৫ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল করে আছেন।
বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেন এই আইনজীবী।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৩
ইউজি/এসএএইচ