ঢাকা: কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বুধবার (১ মার্চ) সকাল ১০টায় পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ উপলক্ষে পুলিশ স্টাফ কলেজে স্থাপিত ‘পুলিশ মেমোরিয়াল’ বেধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
পুলিশের পক্ষ থেকে স্বশ্রদ্ধ সালাম প্রদর্শন করা হয়৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির পরে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে বেদিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, এসবি প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, র্যাব মহাপরিচালক(ডিজি) খুরশীদ হোসেন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি নূরুল ইসলাম, ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান হাবিবুর রহমান, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (এডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গ করেছেন পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ১২১ সদস্য।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন দেশে কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর জীবন দেওয়া সদস্যদের স্মরণ করা হয়। এজন্য তৈরি করা হয়েছে মেমোরিয়াল।
আমেরিকায় ন্যাশনাল ল এনফোর্সমেন্ট অফিসার্স মেমোরিয়াল, ন্যাশনাল গার্ড মেমোরিয়াল মিউজিয়াম, এয়ারফোর্স মেমোরিয়াল জার্মানীতে সোভিয়েত ওয়ার মেমোরিয়াল, অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে ন্যাশনাল পুলিশ মেমোরিয়াল, ভিয়েতনামে ওয়াল মেমোরিয়াল, ফ্রান্সে ডব্লুভিইউ ডব্লুভিইউ ২ মেমোরিয়াল, সিঙ্গাপুরে পুলিশ হেরিটেজ সেন্টার, ইন্ডিয়ায় মেমোরিয়াল দিল্লি।
এমন ধারণা থেকেই বাংলাদেশ পুলিশের ১৯৯৩ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে এবং কর্মরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ২০১৭ সাল থেকে ১ মার্চ মেমোরিয়াল-ডে পালন করছে।
প্রতি বছর মেমোরিয়াল-ডে তে ঐ বছরে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের উপস্থিতিতে সম্মান প্রদর্শন করা হয়। মেমেরিয়াল-ডে পালন করার জন্য ইতোপূর্বে রেপলিকা স্মৃতি তৈরি করে পালন করা হয়েছে। জেলা/ইউনিটে একই দিনে রেপলিকা স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করে মেমেরিয়াল-ডে পালন করা হচ্ছে।
বিভিন্ন দেশের বিদ্যমান স্মৃতিস্তম্ভ পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ পুলিশ ২০১০ সালে স্থায়ী দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিজ্ঞ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়। এই ধারাবাহিকতায় নকশা প্রণয়ন ও সাইট নির্ধারণ করে ২০১৯ সালে নির্মাণ কাজ আরম্ভ করা হয়।
মেমোরিয়াল টাওয়ারের গ্লাসগুলো দিনের বেলায় টাওয়ার ভেদ করে যাতে আলো প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য বেলজিয়ামে নির্মিত ডাবল স্যান্ড ব্লাষ্ট গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। আলোর বিকিরণ যাতে রাতের বেলায় বহুদুর থেকে দেখা যায় সে জন্য বিদেশ থেকে আমদানীকৃত বিশেষ কোণে প্রতিফলিত হয় এমন বীমের লাইট ব্যবহার করা হয়েছে।
এ স্তম্ভের আড্ডারগ্রাউন্ডে ১৯৯৩-২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ পুলিশে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বীর পুলিশ সদস্যদের ডাটা সংরক্ষিত রয়েছে। আশপাশের বিভিন্ন দেশের স্মৃতিজ্ঞ হতে স্থাপত্যশৈলির দিক থেকে এটি একটি অন্যতম দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিস্তম্ভ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৩
এমএমআই/এসএ