নাটোর: বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে যতক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন, ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সবকিছু, মৃত্যু হয়েছে দুধজান বিবি (৯০) নামে এক বৃদ্ধার। ভস্মীভূত হয়েছে ওই বাড়ির ৯টি কাঁচা ঘর ও মজুদ করা ধান-চালসহ মূল্যবান মালামাল।
রোববার (৫ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার পাইকেরদৌল রিফুজিপাড়া এলাকায় ঘটে এমনই এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা।
নিহত দুধজান বিবি ওই এলাকার মৃত মোছলেম উদ্দিনের স্ত্রী। অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি নিজ ঘরেই শুয়ে ছিলেন।
এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস অফিস সূত্র জানায়, আজ (৫ মার্চ) দুপুরের দিকে হঠাৎ করেই দুধজান বিবির বাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এসময় বাড়ির মানুষজন ছুটে ভেতর থেকে বের হয়ে এসে প্রতিবেশীদের সহায়তায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে তারা ব্যর্থ হন। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই সবকিছু পুড়ে ভষ্মীভূত হয়ে যায়। এসময় খোঁজাখুঁজি করে দুধজান বিবিকে তার ঘরের মধ্যে দগ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ অবস্থায় তারা তার মরদেহ উদ্ধার করেন এবং আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করেন।
নাটোর ফায়ার স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক একেএম মোর্শেদ বাংলানিউজকে জানান, আজ (৫ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খবর পেয়ে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে আরও দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চুলার আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহরাব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, মরহুম মোছলেম উদ্দিনের স্ত্রী দুধজান বিবি ছেলে, মেয়ে ও নাতি-নাতনি নিয়ে স্বামীর ভিটায় থাকতেন। আগুন লাগার সময় তিনি তার ঘরেই ছিলেন। কিন্তু কেউ বুঝে ওঠার আগেই নিজ ঘরে তিনি অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
নিহতের ছেলে আফছার আলী বাংলানিউজকে জানান, তাদের পরিবারের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। তারা এখন কোথায় থাকবেন, সেই ব্যবস্থাও নাই। পরনের কাপড়ও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।
খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন সাত্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৯টি পরিবারকে নগদ ২০ হাজার করে টাকা এবং প্রতিটি ঘরের জন্য দুই বাণ্ডিল করে টিন বরাদ্দের ঘোষণা দেন।
এছাড়া পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি করে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন সংসদ সদস্য।
সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যেককে একটি করে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত ৯ পরিবারকে আমার নিজস্ব তহবিল থেকে নগদ ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেককে দুই বাণ্ডিল করে টিন বরাদ্দ দেওয়ার কথাও বলেছি।
এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য অন্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই জনপ্রতিনিধি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৩
এনএস