ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোজায় নির্বিঘ্ন ব্যবসায় রেস্তোরাঁ মালিকদের ৮ দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
রোজায় নির্বিঘ্ন ব্যবসায় রেস্তোরাঁ মালিকদের ৮ দাবি

ঢাকা: সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা ও সমন্বয়হীনতা নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অন্তরায় বলে অভিযোগ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিকরা। ১২টি অধিদপ্তর থেকে রেস্তোরাঁ মালিকদের মনিটরিং করা হয়।

কিন্তু বছরের পর বছর ধরে মালিকরা দাবি করে আসছেন ১টি অধিদপ্তরের অধীনে তারা কাজ করতে চান।

রেস্তারাঁ মালিকদের অভিযোগ, যত দিন যাচ্ছে প্রত্যেকটা অধিদপ্তর বিক্ষিপ্তভাবে হস্তক্ষেপ করছে ও ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর। তাই আসন্ন মাহে রমজানে ইফতারি ও সেহরি সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে পরিচালনা করার সুযোগ চান রেস্তোরাঁ মালিকরা।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি, রমজানের রেস্তোরাঁয় ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি, বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচারণা এবং সরকারি সংস্থার অভিযানের নামে হয়রানি প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।

তিনি বলেন, কোনো বিশেষজ্ঞ ছাড়াই, লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতিসাধন করছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করে যাচ্ছিলাম, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপেক্ষের কাছে আমরা অনুরোধ করেছিলাম যে, আমাদের সেক্টরের ৯৫ শতাংশ কর্মী অদক্ষ ও স্বল্প শিক্ষিত, তাদের আগে ট্রেনিংয়ে নিয়ে আসেন এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে আমাদের একটি মন্ত্রণালয়/ অধিদপ্তর/সংস্থার অধীনে নিয়ে আসেন এবং  একটি গ্রহণযোগ্য এস.ও.পি দেন, যার গাইডলাইনে আমরা চলতে পারবো।

মহাসচিব আরও বলেন, ঢাকা মহানগরের দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আমাদের পরিচালনার/ মনিটরিং করার উদ্যোগ নিয়েছেন। যেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও আইসিডিডিআর যুক্ত করেছেন, কিন্তু প্রধান স্টেক হোল্ডার হওয়া স্বত্ত্বেও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে যুক্ত করা হয়নি। এভাবে কোনোদিনই সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে আমরা ভয় পাচ্ছি, প্রতিবারের মতো রমজানে আমাদের ওপর বিশাল খড়গ নেমে আসবে। তাই আমরা সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি জানাচ্ছি।

দাবিগুলো হলো—
১। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে।

২। করোনা মহামারিতে প্রায় ৩০% রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়েছে। যারা টিকে আছে তারাও ধুকে ধুকে চলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায় টিকে থাকতে এ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি সরকারের সহযোগিতা জরুরি।

৩। বাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে রেস্তোরাঁ খাতে। ব্যবসায় টিকে থাকতে খাবারের দাম বৃদ্ধির বিকল্প নেই আমাদের। অন্যদিকে খাবারের দাম বৃদ্ধি করলে ভোক্তারাও রেস্তোরাঁয় খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে রেস্তোরাঁ বড় সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

৪। রেস্তোরাঁ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রচারণা মিথ্যা প্রমাণিত হলে আইসিটি আইনে মামলা করা হবে।

৫। রেস্তোরাঁ সেক্টরে ভ্যাটের হার সর্বোচ্চ ৩% এবং ট্যাক্সের হার সর্বোচ্চ ০.৫% করার দাবি।

৬। রেস্তোরাঁ সেক্টরে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া রেস্তোরাঁয় গ্যাসলাইন ট্রান্সফার কোনো কারণ ছাড়াই বন্ধ রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে লাইন ট্রান্সফার এবং নাম পরিবর্তনের সকল প্রতিবন্ধকতা তুলে নিতে হবে।

৭। প্রতি বছরই মাহে রমজান সমাগত হলে বিভিন্ন মৌসুমি-ফড়িয়া/ব্যবসায়ীরা ইফতারের নামে ইফতারি পসরা সাজিয়ে বসেন। এদের হাইজেনিক/নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, এই বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি।

৮। পবিত্র মাহে রমজানে ইফতারি ও সেহরি সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে পরিচালনা করার সুযোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।