ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রমজানে খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে থাকবে র‌্যাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
রমজানে খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে থাকবে র‌্যাব ফাইল ফটো।

ঢাকা: আসছে রমজান, ইবাদতের মাস। প্রতিবছরই রমজানে ও ঈদকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে ওঠে প্রতারক ও অপরাধী চক্রের সদস্যরা।

বেড়ে যায় চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা। সেসঙ্গে চওড়া দামে গরম হয়ে ওঠে ভোগ্য পণ্যের বাজার। এছাড়াও সুবিধাভোগী কিছু মানুষ অধিক মুনাফা লাভের আশায় খাদ্য-দ্রব্যে মিশায় ভেজাল, তৈরি করে নকল সব পণ্য। এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশের মানুষদের কষ্ট দিতে প্রতারণার উৎসবে যেন মেতে উঠে।

অন্যদিকে সড়কে, পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে ওঁৎপেতে থাকে ছিনতাইকারী ও ডাকাত চক্রের সদস্যরা। ব্যবসায়ী ও পথচারীসহ সাধারণ জনমানুষের মনে বেড়ে যায় ওই আতঙ্ক। সেসঙ্গে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আতঙ্ক থাকে। সক্রিয় হয়ে ওঠে জালনোটের কারবারিরা, বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে, রেলস্ট্যান্ডে প্রতারণার মাধ্যমে সর্বস্ব লুটে নিতেও ওঁৎপেতে থাকে অজ্ঞানপার্টি ও মলম পার্টির সদস্যরা। এসব অপরাধীদের উদ্দেশ্য একটাই লোক ঠকিয়ে মুনাফা অর্জন। তবে এসব অসাধু ব্যক্তি ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব জানায়, রমজান উপলক্ষে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও খাদ্যে ভেজাল মেশানো ও নকল পণ্য তৈরির বিরুদ্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে র‌্যাব। শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানেই পরিচালনা করা হবে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেসঙ্গে রাজধানীসহ সারাদেশে চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, জালনোটের কারবারি চক্রের সদস্যদের প্রতিরোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করা হবে।

রমজান ও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সব সময় চুরি, ছিনতাই, জালনোটের প্রচলন, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বাড়ে। এ চক্রের খপ্পরে পড়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা হন সর্বস্বান্ত। সম্প্রতি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকা লুটের ঘটনায় শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। এসব চক্রের তৎপরতা প্রতিরোধে, বিশেষ করে নগরবাসীদের চলাফেরা নির্বিঘ্ন করতে অগ্রিম গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে এরই মধ্যে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতা। সেসঙ্গে বিভিন্ন মার্কেট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে সংশ্লিষ্ট থানাকে টহল জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তারা বলছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়কে চলাচল কতটুকু নিরাপদ রাখতে পারে, ক্রেতারা কতটুকু বাজারমুখী হবে, তা সময়ই বলে দেবে। কোনো শঙ্কা ছাড়া যখন ক্রেতারা বাজারমুখী হবেন, তখনই বেচাকেনা বাড়বে। এছাড়া পণ্য কিনতে বিভিন্ন সময় বড় অংকের টাকা বহন করতে হয় তাদের, এবার বেশ আতঙ্কে আছেন তারা।

এছাড়া বড় বড় শপিংমলগুলোতে চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নারী সদস্যদের মোতায়েন করা প্রয়োজন। কারণ রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে নারী চোর চক্রের সংখ্যা বেড়ে যায়।

ভেজাল খাদ্য:

রমজান মাসে সারা দিন রোজা রাখার পর স্বাভাবিকভাবেই নির্ভেজাল খাদ্যদ্রব্য খেতে চায় সবাই। কিন্তু বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যদ্রব্যে যারা ভেজাল মেশাবে সেই সব অসাধু বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আনতে র‌্যাব তৎপর।

র‌্যাব বলছে, রমজানে যারা খাদ্যে ভেজাল দেবে, পরিমাপে কম দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত:

রমজানে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, নকল ও নিম্নমানের পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ রোধে অন্যান্য সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত মোবাইল কোর্ট ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে র‌্যাব। শুধু রাজধানী নয়, দেশের অন্যান্য জেলায়ও একই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি প্রতিরোধে জোরদার টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।

র‌্যাব জানায়, রমজানে দেশবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজধানীসহ সারাদেশে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় থাকবে র‌্যাবের পর্যাপ্ত টহল। পোশাকে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা অবস্থান করবে।

রমজানে ঈদকে সামনে রেখে মানুষজন শপিং করতে বের হয়। তাদের নিরাপত্তায় রাজধানীর প্রতিটি ছোট-বড় মার্কেট ও শপিংমলের সামনে থাকবে র‌্যাবের টহল টিম। সাইবার ওয়ার্ল্ডেও র‌্যাবের নজরদারি থাকবে যাতে কোনো কুচক্রী মহল গুজব ছড়াতে না পারে।

এ বিষয়ে র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলানিউজকে বলেন, রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে র‌্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের র‌্যাব মহাপরিচালক স্যার বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, রমজান মাসে বিভিন্ন অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এসব অপরাধীদের অপরাধ কার্যক্রম বন্ধে আমরা প্রস্তুত। রমজানে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়:১৮৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
এসজেএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।