ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইন্টারপোলের রেড নোটিশে আরাভের জন্মস্থান বাগেরহাট কেন?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে আরাভের জন্মস্থান বাগেরহাট কেন?

ঢাকা: পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সদস্য খুনের মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। তবে ইন্টারপোলের নোটিশে এ আসামির জন্মস্থান বাগেরহাটে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখা সূত্রে জানা যায়, রবিউলের জন্ম বাগেরহাটের চিতলমারিতে মামার বাড়িতে, সেখানেই তার অনেকটা বেড়ে ওঠা। তার জাতীয় পরিচয়পত্রে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে বাগেরহাট উল্লেখ করা হয়েছে।

রেড নোটিশ জারি করতে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো আবেদনে রবিউলের জাতীয় পরিচয়পত্রের বাংলা ও ইংরেজি কপি সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। তাই তার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ীই ইন্টারপোলের নোটিশে ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে জানানো হয়, পুলিশ কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের আসামি আরাভ খান মামলার এজাহারভূক্ত ‘রবিউল ইসলাম’ নামেই জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছিলেন। ঠিকানা হিসেবে বাগেরহাট জেলাও উল্লেখ করেছিলেন।

এনআইডি অনুযায়ী, রবিউল ইসলামের জন্ম ১৯৮৭ সালের ১৯ আগস্ট। পড়ালেখা করেছেন মাধ্যমিক পর্যন্ত, জন্মস্থান বাগেরহাট ও রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। রবিউলের বাবা মতিউর রহমান, মাতা লাখি ও স্ত্রীর নাম রুমা।

এনআইডিতে আরাভ খান স্থায়ী ও বর্তমান উল্লেখ করেছেন বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলার কোদলিয়া ইউনিয়নের আড়ুয়াডিহি গ্রাম।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আশুতিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে রবিউল ইসলাম ওরফে সোহাগ মোল্লাই আরাভ খান। মতিয়ার রহমান মোল্লা একসময় চিতলমারী উপজেলায় ফেরি করে সিলভারের হাঁড়িপাতিল বিক্রি করতেন।

২০০৫ সালে চিতলমারী সদরের একটি বিদ্যালয় থেকে রবিউল এসএসসি পাস করেন। অভাবের কারণে তার লেখাপড়া আর এগোয়নি। ২০০৮ সালে চিতলমারী থেকে ঢাকা আসে রবিউল ইসলাম। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীতে পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যাকাণ্ডের আসামি এই রবিউল।

গত ২০ মার্চ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জানিয়েছিলেন, আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এর ভিত্তিতে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারির কথা শোনা গেলেও তালিকায় তার নাম দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশে রবিউল ওরফে আরাভ খানের নাম পাওয়া গেছে।

তালিকায় ৬৩তম বাংলাদেশি তিনি। রেড নোটিশে রবিউল ওরফে আরাভ খানের বয়স ৩৫ ও জন্মস্থান বাংলাদেশের বাগেরহাটে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রেড নেটিশ জারির পর প্রথম দুই-তিন দিন প্রকাশ হয় না। শুধু এনসিবি সদস্য দেশ সমূহের কর্মকর্তারা দেখতে পান। পরে সেটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলে সবাই দেখতে পান।

ইন্টারপোলের আট ধরনের নোটিশের মধ্যে রেড নোটিশ জারির অর্থ হলো ওই ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ও বিচার বিভাগ বিচারের মুখোমুখি করতে অথবা দণ্ড কার্যকর করার জন্য খুঁজছে।

সদস্য দেশগুলো ইন্টারপোলের মাধ্যমে পলাতক আসামির সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে এবং সে দেশের সরকার তা খতিয়ে দেখে সন্তুষ্ট হলে তাকে গ্রেফতারও করতে পারে।

পুলিশ জানায়, পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার আসামি গোপালগঞ্জের যুবক রবিউল ইসলাম পালিয়ে ভারতে গিয়ে নিজের নাম-জাতীয়তা পাল্টে সেখানকার পাসপোর্ট তৈরি করেন। সে পাসপোর্টেই পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই।

দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আরাভ খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সম্প্রতি নিজের জুয়েলার্সের দোকান উদ্বোধন করতে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ অন্যান্য তারকাদের আমন্ত্রণ জানান আরাভ। এরপরেই আলোচনায় আসেন তিনি। জানা যায়, তিনি পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম।

তাকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফেরাতে পুলিশের পক্ষ থেকে নানাভাবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।

ইন্টারপোলে আরাভ খানের রেড নোটিশ দেখুন

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
পিএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।