সাভার (ঢাকা): রাত পোহালেই স্বাধীনতার ৫৩ বছরে পৌঁছাবে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আগামীকাল রোববার (২৬ মার্চ) সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে আত্মত্যাগী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। ইতোমধ্যে শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রস্তুত হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত আলোক বাতি, সিসিটিভি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ায়।
শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। সৌধস্তম্ভের চূড়া থেকে শুরু করে শহীদ বেদি ও পায়ে চলার সড়ক সবখানে ধুয়ে মুছে চকচকে করা হয়েছে। প্রয়োজন মতো করা হয়েছে রঙ। সৌধের মূল ফটক থেকে বেদি পর্যন্ত হেঁটে চলার পথে লাল ইটের মধ্যে সাদা রংয়ের ছোঁয়া ছড়াচ্ছে শুভ্রতা।
আরও দেখা গেছে, চত্বরজুড়ে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ ও সাদাসহ বিভিন্ন রঙের, বর্ণের ফুলের গাছ। এসব গাছে ফুটে আছে রঙিন ফুল। সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে এসব গাছেরও। পুরো জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভেতর ও বাইরে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দেওয়া হবে তিন বাহিনীর গার্ড অব অনার।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সৌধ প্রাঙ্গণ। তখন মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, বিদেশী কূটনৈতিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানাবেন।
গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস ঘিরে গত একমাস ধরেই আমরা স্মৃতিসৌধ এলাকায় কাজ করছি। এজন্য গত ১২ মার্চ থেকে সৌধ এলাকায় সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ধোয়া-মোছা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষে সৌধ এলাকাকে ফুলে ফুলে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। রাতের বেলার জন্য লাল-সবুজ আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত আছে।
নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চার স্তরের নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো রয়েছে সৌধ এলাকা। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশসহ অইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সৌধ এলাকায় জড়ো হচ্ছেন। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে সৌধ ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসিটিভির পাশাপাশি বসানো হয়েছে অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এ দিবসকে ঘিরে স্মৃতিসৌধের আয়োজন ঘিরে আমরা এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছি। এখানে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য শুধু স্মৃতিসৌধ নয়, সাভার ও আশুলিয়া এলাকা আমরা সিসিটিভির আওতায় রেখেছি। এর বাইরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে।
এছাড়া স্মৃতিসৌধের আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের নতুন করে কাউকে বাড়িতে আশ্রয় দিতে নিষেধ করা হয়েছে। আত্মীয়-স্বজন আসার ক্ষেত্রেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
এসএফ/এসআইএ