ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালক হত্যার মুলহোতা মমিন গ্রেফতার

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালক হত্যার মুলহোতা মমিন গ্রেফতার

পাবনা (ঈশ্বরদী): পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিকিম কোম্পানির গাড়িচালক হত্যার মুলহোতা আব্দুল মমিনকে (৩২) ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১২)।

সোমবার (২৭ মার্চ) বিকেলে র‌্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, রোববার (২৬ মার্চ) ঢাকার হাতিরঝিল থানার বাংলামোটর এলাকায় অভিযা পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার মমিন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বাঁশেরবাদা মধ্যপাড়া গ্রামের বাহাদুর খাঁর ছেলে।

দুইদিন নিখোঁজের পর নিহত গাড়িচালক সম্রাট খান ও তার চালিত গাড়িটি খুঁজে পায় পুলিশ। গত শনিবার (২৫ মার্চ) সকাল ৮টায় কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার চর- সাদিপুর ইউনিয়নের আড়িয়াবান্দা গ্রামের সিলাইদহ ঘাট থেকে একটি সাদা জিপ গাড়িসহ চালক সম্রাটের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে কুমারখালী থানা পুলিশ।

র‌্যাব-১২ সিরাজগঞ্জের অধিনায়ক মারূফ হোসেন জানান, মমিনকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, পরকিয়া প্রেমের সম্পর্কের কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে।

তিনি আরও জানান, প্রায় ৩ বছর ধরে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিকিম কোম্পানির পরিচালকের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন সম্রাট। তিনি প্রতিদিন রাত সাড়ে ১০টায় ডিউটি শেষে নিজ বাড়িতে যেতেন। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) তিনি ডিউটি শেষে নিজ বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন সম্রাট ফোন দেন। কিন্তু তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

র‌্যাব-১২ সিরাজগঞ্জের অধিনায়ক জানান, পরে শুক্রবার (২৪ মার্চ) নিকিম কোম্পানির অন্য চালকদের কাছে নিহতের বাবা সম্রাটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ডিউটি শেষ করে সম্রাট অফিসের হাইচ গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৫-৪৭৪৮) নিয়ে বের হয়ে যান। তখন পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন যে সম্রাট অফিসের গাড়ি নিয়ে বাঁশেরবাদা মধ্যপাড়ায় তার বন্ধু আব্দুল মমিনের বাসায় গিয়েছিল। সেই সূত্র ধরে সম্রাটের পরিবারের লোকজন মমিনের বাসায় গিয়ে তাকে না পেয়ে মমিনের স্ত্রী সীমার কাছে সম্রাটের ব্যাপারে জানাতে চান। কিন্তু তিনি এতে উত্তেজিত হন এবং সম্রাটের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে নারাজী জানান।

মারূফ হোসেন জানান, এই হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সম্রাটের বাবা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন (মামলা নং-৫৮, তারিখ-২৫/০৩/২০২৩, ধারা ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০)। কিন্তু মমিন আত্মগোপনে চলে গেলে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে র‌্যাব।

অধিনায়ক মারূফ হোসেন আরও জানান, পরে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জের অফিসার ফোর্সের বিশেষ অভিযানে এবং র‌্যাব-৩ এর সহযোগীতায় রোববার (২৬ মার্চ) রাতে ঢাকার বাংলামোটর এলাকা থেকে মমিনকে গ্রেফতার করা হয়।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বাংলানিউজকে জানান, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিকিম কোম্পানির গাড়িচালক হত্যার মুলহোতা আব্দুল মমিনকে থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) আদালতের মাধ্যমে তাকে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, মরদেহ উদ্ধারের রাতেই মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।