ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জলবায়ু ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে জাতিসংঘে প্রস্তাব গৃহীত

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
জলবায়ু ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে জাতিসংঘে প্রস্তাব গৃহীত

ঢাকা: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের ক্ষেত্রে দায়ী রাষ্ট্রগুলোর আইনগত বাধ্যবাধকতার বিষয়ে পরামর্শমূলক মতামত দিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অনুরোধ করে একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশসহ ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কোর গ্রুপ দ্বারা উত্থাপিত প্রস্তাবটি জলবায়ু ন্যায়বিচার ও ন্যায্যতার পক্ষে সমর্থনকারী দেশগুলোর জন্য একটি যুগান্তকারী অর্জন।

বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কোর গ্রুপের পক্ষে রেজুল্যুশনটি সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করে ভানুয়াটুর প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা করার নিমিত্তে এ রেজুল্যুশনে মানবাধিকার আইনসহ বিদ্যমান আন্তর্জাতিক সব আইন, স্বীকৃত নীতিমালার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দায়ী দেশগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতার ওপর পরামর্শমূলক মতামত দিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অনুরোধ করা হয়। কার্বন নিঃসরণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনি পরিণতি সম্পর্কে পরামর্শ দিতেও এ রেজুল্যুশনে অনুরোধ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে।

সাধারণ পরিষদে রেজুল্যুশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের জন্য আয়োজিত উচ্চ অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসাত্মক ও অপরিবর্তনীয় হুমকির বিষয়ে স্পষ্ট সতর্কতা সত্ত্বেও মানবতার বেঁচে থাকার জন্য যে মাত্রায় বৈশ্বিক উদ্যোগ প্রয়োজন, তার ধারে কাছেও নেই বিশ্ব সম্প্রদায়। এই রেজুল্যুশন এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক পরামর্শমূলক মতামত ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে  দায়ী দেশগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতা, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তন থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করার জন্য মানব সভ্যতাকে আরও সম্যক ধারণা দিয়ে তাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

আদালতের পরামর্শমূলক মতামতের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন, এই ধরনের পরামর্শমূলক মতামত জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় আরও সাহসী ও শক্তিশালী ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে। রেজুল্যুশনটি সদস্য দেশগুলোর পাশাপাশি জলবায়ু কর্মী এবং যুব সমাজসহ আন্তর্জাতিক সুশীল সংস্থাগুলির কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছে।

ভানুয়াটুর আহ্বানে প্রতিষ্ঠিত কোর গ্রুপটি রেজুল্যুশনের খসড়া প্রণয়ন থেকে প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে গ্রহণ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া জুড়ে অত্যন্ত সক্রিয় ছিল। খসড়া রেজুল্যুশনের ওপর তারা জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের অংশগ্রহণে উন্মুক্ত এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে একাধিকবার অনানুষ্ঠানিক সভা করেছে। বাংলাদেশ, কোর গ্রুপের সদস্য হিসেবে, খসড়া প্রণয়ন ও নেগোসিয়েশন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আউটরিচ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত ছিল।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের কাছ থেকে সমর্থন অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। রেজুল্যুশন গৃহীত হওয়ার পর  পররাষ্ট্র সচিব ভানুয়াটু কর্তৃক আয়োজিত এক সংবর্ধনায় অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
টিআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।