ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘আজ বিজু, বিজু বিজু...’

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
‘আজ বিজু, বিজু বিজু...’ পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের প্রধানতম সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব বৈসাবি। ছবি: বাংলানিউজ

খাগড়াছড়ি: ‘তুরু তুরু তুরু রু বাজি বাজত্তে, পাড়ায় পাড়ায় বেরেবং বেক্কুন মিলিনে, এচ্যে বিজু, বিজু, বিজু। ’(তুরু তুরু রু বাঁশি বাজে।

পাড়ায় পাড়ায় সবাই মিলে ঘুরব। আজকে বিজু, বিজু বিজু) পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের প্রধানতম সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব বৈসাবি উৎসবকে ঘিরেই এমন গানে গানে মেতে উঠেছে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম।

বুধবার (১২ এপ্রিল) নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব। প্রাণের এই উৎসব ঘিরে পাহাড় এখন রঙ্গে রঙিন। ত্রিপুরাদের বৈসু মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসবের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে নামকরণ করা হয়েছে বৈসাবি। আর আজ বিজু দিয়ে পাহাড়ে শুরু হয়েছে বর্ষবরণের এই উৎসব। সকালে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে নদীতে ফুল দিয়ে প্রার্থনায় পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করা হয়।

ভোরের আলো ফোটার আগেই তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের মানুষ ঐহিত্যবাহী পোশাকে সেজে নদীর পাড়ে আসতে শুরু করে তরুণ-তরুণীরা। ছোটরা এসেছে বাবা-মার হাত ধরে। বছরের গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দদায়ক দিন বলে কথা।

চাকমারা উৎসবের প্রথম দিনে বন পাহাড় থেকে সংগৃহিত ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। সবার মঙ্গল কামনায় কলাপাতায় করে ভক্তি শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর উদ্দ্যেশে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানী ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করে। প্রত্যাশা করা হয় পাহাড়ে হানাহানি ভুলে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে আসবে শান্তি ও সম্প্রীতি।

১৩ এপ্রিল চাকমাদের বিজুর দ্বিতীয় দিন। এই দিন তারা ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করে আপ্যায়ন করবেন। ৩০ পদের সবজি দিয়ে তৈরি করা হবে বিশেষ পাজন। এই দিন থেকে তিনদিনব্যাপী ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু উৎসব শুরু হবে। এই দিন তারও দেবী গঙ্গার উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে প্রার্থনা করবেন।

মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব শুরু হয় বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে। উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ জলকেলী। সব দুঃখ ও পাপ ধুয়ে দিতে মারমারা একে অপরের দিকে পানি ছুঁড়ে মেতে উঠেন।

এই উৎসবকে কেন্দ্র করে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিণত হয় সব সম্প্রদায়ের মানুষের মিলন মেলায়। এদিকে এই উৎসব দেখতে খাগড়াছড়িতে বেড়েছে পর্যটকের সংখ্যা। বলা যায় উৎসবে রঙ্গীন পার্বত্য চট্টগ্রাম।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
এডি/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।