বরিশাল: পটকা ফাটানো নিয়ে বিরোধের জেরে কিশোর তিন বন্ধুর মারধরে রমজান আলী বেপারী (১৪) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কিশোরের মৃত্যু হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে নগরের এয়ারপোর্ট থানার লুৎফর রহমান সড়কের হাজেরা খাতুন স্কুলের পেছনের বালুর মাঠে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়।
মৃত রমজান আলী বেপারী ওই এলাকার বাসিন্দা বাদল বেপারীর ছেলে এবং পেশায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক।
এদিকে এ ঘটনার পর নয়ন হাওলাদার (১২) ও রিফাত হাওলাদার (১৪) নামে দুই কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক নয়ন হাওলাদার বরিশাল নগরের হাজেরা খাতুন সড়কের বাসিন্দা আল-আমিন হাওলাদারের ছেলে এবং রিফাত হাওলাদার নগরের লুৎফুর রহমান সড়কের বাসিন্দা ও পরিবহনের হেলপার রেজাউল হাওলাদারের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন জানান, হাজের খাতুন স্কুলের পেছনে বালুর মাঠে পটকা ফাটানো নিয়ে রমজানের সঙ্গে আটক দুই কিশোরসহ হৃদয় নামে অপর এক কিশোরের দ্বন্দ্ব হয়। এসময় একজন অপরজনের মাকে সম্মোধন করে গালি দিলে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
এর জেরে রমজানের মাথায় ঘুষি ও পেটে লাথি মারাসহ তাকে মারধর করে তারা। এতে রমজান অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবস্থা গুরুতর হলে রমজানকে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন আনুমানিক আধা ঘণ্টা পর রমজানের মৃত্যু হয়।
পরিদর্শক লোকমান হোসেন বলেন, ঘটনার পর বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা নয়ন ও রিফাতকে আটক করে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, গতরাতে (১৩ এপ্রিল) পটকা ফাটানো নিয়ে ওরা বন্ধুরা মারামারি করে। মারামারির সময় রমজানের পেটে বা অন্য কোথাও জোরে লাথি মারা হয়েছে। এতে রমজান গুরুতর আহত হলে রাতেই তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সকালে (১৪ এপ্রিল) অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রমজানের মৃত্যুর খবরে বাবা বাদল বেপারী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন এবং তার মা বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
ঠিক কী ঘটেছে- তা জানেন না, জানিয়ে ফুপু শাহনাজ বেগম বলেন, রিফাত, নয়ন ও হৃদয় মিলে আমার ভাইয়ের ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমরা এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নয়তো ওরা এভাবে আরও মায়ের বুক খালি করবে।
এদিকে রমজান হত্যার ঘটনায় রিফাত, নয়ন ও হৃদয়কে আসামি করে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করার কথা জানিয়েছেন শোকার্ত বাবা বাদল বেপারী।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে এয়ারপোর্ট থানার এসআই সিএম মেহেদি হাসান বলেন, রমজানের মাথায় ও বাম কানের উপরিভাগে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হয়েছে, ঘুষিতে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিতভাবে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।
এ ঘটনায় মামলার এজাহার লেখা হচ্ছে বলেও জানান এসআই মেহেদি হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৩
এমএস/এনএস