ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

তীব্র গরমে বেহাল দশা ১০ হাজার বন্দির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৩
তীব্র গরমে বেহাল দশা ১০ হাজার বন্দির

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি রাজধানীতেও গরমের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে,৫৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন কাটাচ্ছেন রাজধানীবাসী।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় গরমের আঁচ আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। ১৯৬৫ সালে ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই প্রচণ্ড গরমের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জে) ১০ হাজার বন্দির অবস্থা আরো করুন। ধারণ ক্ষমতা ৪৫০০ হলেও বন্দি আছে প্রায় দশ হাজারের মতো।

এই গরমে কেমন আছেন তারা, জানতে চাইলে রোববার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি সূত্র জানায়, বন্দিদের জন্য সব ওয়ার্ডে সিলিং ফ্যান থাকলেও অতিরিক্ত গরমের কারণে সেখান থেকে বাতাস বের হয় আগুনের ফুলকির মতো। বন্দিরা নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে কারাগারের ময়দানে একটু গাছ তলায় আশ্রয় নেবে তারও কোনো ব্যবস্থা নেই। কারণ কারাগারে তেমন কোনো বড় গাছও নেই। সূর্যের ভয়াবহ তাপের কারণে চারিদিকে আগুনের মতো বাতাস বইতে থাকে। এই প্রচণ্ড গরমের কারণে কারাগারে প্রতিদিনই অনেক বন্দি অসুস্থ হয়ে কারা হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সূত্রের দাবি, কারাগারে বন্দিদের থাকার স্থানে কতটা যে গরম তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। দিনের বেলায় বন্দিরা পর্যাপ্ত পানি থাকার কারণে গোসল করে কাটিয়ে দিতে পারে কিন্তু বিকেলে লকারের সময় তাদের যে কি অবস্থা হয় ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। ফ্যান থাকলেও সেখান থেকে বের হতে থাকে একেবারে গরম বাতাস। দিনের বেলায় গরমের পাশাপাশি সন্ধ্যার পরে সেটা আরো বেশি বেড়ে যায়।

কথা হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান শুভর সঙ্গে।

শুভ বাংলানিউজকে সরাসরি বলেন, এই তাপ প্রবাহ যদি অব্যাহত থাকে তাহলে কারাগারের ভেতরে গরমে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। এই গরমের বন্দি রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।  

তিনি বলেন, তীব্র গরমে ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, জ্বর কাশি সর্দিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বন্দিরা। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কারা হাসপাতাল থেকে ওষুধও দিয়ে দিচ্ছি।

তবে এই অতিরিক্ত গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েক জন বন্দিকে কারা হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বন্দি রোগীকে বাইরের হাসপাতালে পাঠানো হয়নি।  

চিকিৎসক আরও বলেন, বন্দিদের থাকার সব জায়গায় ফ্যান আছে। কিন্তু সেগুলো থেকে গরম বাতাস বের হয়। আর কারাগারে গাছগুলো এখনো বড় হয়নি, ছায়াও নেই। তবে পর্যাপ্ত পানি সাপ্লাই রয়েছে তারাদিনের বেলায় ভালোভাবে গোসল করতে পারেন।

বন্দিরাও যেন প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে আছেন, একটু বৃষ্টি হলেই মিলবে স্বস্তি।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৩
এজেডএস/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।