সিলেট: প্রচণ্ড গরমে অষ্ঠাগত প্রাণ। বাইরে বেরোলেই যেনো প্রাণ সংহারের ভয়।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১০টা থেকে সিলেট নগরে শীতল হাওয়া বইতে শুরু করে। সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট নগরের আকাশে বিজলী চমকায় এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ি হয়নি।
তবে রাত ৯টা থেকে সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটে বৃষ্টি হয়। রাত ১০টার দিকে ঝড়বৃষ্টিতে রূপ নেয়। এছাড়া নগরসহ দু-একটি উপেজলায় আকাশে মেঘের গর্জন ও গুড়ি গুড়ি শুরু হয়। রাতে পুরো জেলায় বৃষ্টির আশা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট অফিস সূত্র জানায়, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে সিলেটে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আগামি কাল তাপমাত্রা সম্ভাব্য ৩৯ ডিগ্রী দেখানো হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে এভাবে দেশে টানা তাপপ্রবাহ চলছে। কোথাও কোথাও তাপপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করেছে। গরমের কারণে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। এর মধ্যে বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরল সিলেটে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের জমির হোসেন বলেন, সোমবার রাত ৯টার দিকে কোম্পানীগঞ্জে বৃষ্টি শুরু হয়। ক্ষণে ক্ষণে তা রাত ১০টার দিকে ঝড় ঝড়ো বৃষ্টিতে রূপ নেয়।
সিলেটের সংবাদকর্মী জাকির হোসেন বলেন, টানা গরমে হাপিত্যেশ ওঠার পর এই বৃষ্টিতে প্রকৃতি কিছুটা হলেও শীতল হয়েছে।
নগরের মিরের ময়দানের বাসিন্দা মো. আজমল আলী বলেন, সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ অবস্থায় অসহ্য গরমে দিনের বেলা কাজ করতে বের হওয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে প্রকৃতিতে শীতল বাতাস শুরু হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে আবার সিলেটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরমে পৌছেছে। গরমে ঈদ বাজারে প্রভাব পড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে বাতাস শুরু হয়ে গরম অনেকটা কমেছে।
সিলেটের জিন্দাবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সাদেক আহমদ বলেন, এবার ঈদে ক্রেতাসমাগম ঘটলেও গরমের তীব্রতার কারণে মানুষের বাইরে বেরোনো মুশকিল হয়ে পড়ে। এছাড়া লোডশেডিংয়ের তীব্রতার প্রভাব বাজারে পড়েছে। তবে রাতে সিলেট নগরের আকাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও বেশিক্ষণ স্থায়িত্ব পায়নি। অবশ্য প্রকৃতিতে শীতল বাতাসের কারণে গরমের প্রভাব কিছুটা কমেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ সজিব হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, কোম্পানীগঞ্জসহ দু’একটি জায়গায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাতে পুরো সিলেটেই বৃষ্টি হতে পারে, আমরা আগেই এমন আভাস দিয়েছিলাম।
এদিকে, বিদ্যুতের লোকুচরি যখন হাঁসফাঁস অবস্থা তখন বৃষ্টির ছোঁয়া পেল সুনামগঞ্জবাসীও। সোমবার রাত পৌনে ১১টায় সুনামগঞ্জ শহরে ও আশপাশের এলাকায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট হালকা বৃষ্টি হয়। এছাড়াও জেলার কয়েকটি উপজেলায়ও বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
সুনামগঞ্জ শহরে বসবাসরত সামরুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিনের প্রচন্ড গরমে ও লোডশেডিংয়ের তীব্রতায় মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এ অবস্থায় আল্লাহ রহমতের বৃষ্টি দিয়ে ক্ষনিকের জন্য প্রকৃতি শীতল হয়েছে।
রিকশাচালক বাছিত মিয়া বলেন, প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। রিকশায় যাত্রী নিয়ে চলা দায়। তারপরও পেটের তাগিদে প্রখর রৌদে বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সোমবার রাতে কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টি হওয়ার শহর শীতল হয়েছে। ঠাণ্ডা বাতাশ বইছে।
শহরের পশ্চিম বাজারের ব্যবসায়ী জোসেফ মিয়া বলেন, টানা প্রচণ্ড রোদে সারাদিন ক্রেতারা কম আসেন। সন্ধ্যার পর মার্কেট জমলেও লোডশেডিংয়ের কারণে প্রচণ্ড গরমে ক্রেতারা মার্কেটে ঢুকতে পারেন না। তাই বেচাকেনা কম। তবে সোমবার রাতে বৃষ্টি হওয়াতে খানিকটা হলেও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
এনইউ/এফআর