ফেনী: ফেনীর সোনাগাজী শতভাগ বিদ্যুতায়িত একটি উপজেলা। এ উপজেলায় প্রায় পাঁচ লাখ লোকের বসবাস এবং ৮০ হাজার বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে।
এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান ব্যবসায়ী, পরীক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। প্রচন্ড দাপদাহে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সর্বস্তরের জনগণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র নিন্দা আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন অনেকেই। এরইমধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উপজেলার প্রধান কার্যালয়সহ চারটি বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও পাহারা দিচ্ছেন বিদ্যুৎ অফিস ও উপ-কেন্দ্রগুলো।
বিদ্যুৎ সমস্যায় নিয়মিত কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটায় উপজেলার ব্যবসায়ী, কর্মজীবী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপজেলার খামারী ও ফটোসপসহ সকল ব্যবসায়ীরা। ঈদকে সামনে রেখে বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে ঈদের পরে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও এইচএসসি পরীক্ষা। বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীরাও পড়ার টেবিলে বসতে পারছে না। লোডশেডিংয়ের ফলে ভালোভাবে পড়ালেখা করতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। গত এক মাসে ২৪ ঘণ্টায় ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এভাবে নিয়মিত দিনে ১০-১৫ বার পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। আবার কখনো কখনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া টানা ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। সোনাগাজীতে বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ স্বয়ং ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। দলমত নির্বিশেষে সবার মধ্যে তীব্র ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা সরকারের বদনামের উদ্দেশ্যে ডিজিএম পরিকল্পিত লোডশেডিং করাচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন ও পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন নিজেদের ফেসবুক টাইমলাইনে শীঘ্রই সমস্যা কেটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে কেউ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি ও নাশকতা করার চেষ্টা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সোনাগাজী বাজারের ব্যবসায়ী আফলাতুল কাওছার বলেন, বিদ্যুতের ঘন ঘন যাওয়া-আসা ও ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে ব্যবসা করতে চরম কষ্ট হচ্ছে। সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চরম হতাশ হয়ে পড়েছি। এসএসসি পরীক্ষার্থী সালাহ উদ্দিন বলেন, ভয়বহ লোডশেডিংয়ে পড়ার টেবিলে বসতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন পরিষদের এক উদ্যোক্তা জানান, বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে জন্মনিবন্ধন সংশোধনসহ যাবতীয় কাজে চরম সংকটে পড়তে হচ্ছে। প্রিন্স নামে এক ফটোকপি দোকানী বলেন, মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে ফোটকপি করা যাচ্ছে না।
এ ব্যপারে সোনাগাজী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সোনাগাজী জোনাল অফিসের ডিজিএম সনৎ কুমার ঘোষ বলেন, সোনাগাজী উপজেলায় ৮০ হাজার গ্রাহকের জন্য ১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও কর্তৃপক্ষ মাত্র ৭.৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করছেন। চাহিদার তুলনায় অর্ধেকের চেয়েও কম। তাই তিনি লোডশেডিংয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিগগিরই সমাধান করার চেষ্ট চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
এসএইচডি/এসএ