ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টাঙ্গাইলে সীমাহীন লোডশেডিং, জনজীবন অতিষ্ঠ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
টাঙ্গাইলে সীমাহীন লোডশেডিং, জনজীবন অতিষ্ঠ 

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সেহরি, ইফতার ও তারাবিতেও বিদ্যুৎ না থাকায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোজাদারদের।

 

এছাড়াও লাগামহীন লোডশেডিংয়ে অনেকের খামারের মুরগিও মারা যাচ্ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে চলতি বোরো চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যু বিভাগ সূত্র জানায়, টাঙ্গাইল গ্রিডে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২১০ মেগাওয়াট। এতে পাওয়া যাচ্ছে ১৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তবে এ গ্রিডে সবোর্চ্চ চাহিদা রয়েছে ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের।

সরেজমিনে মঙ্গলবার ও বুধবার শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেহরি ও ইফতারের সময় টানা তিন থেকে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এছাড়া তারাবির সময়ও বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে নামাজ আদায় করতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় সেচ পাম্প বন্ধ থাকায় বোরো চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। অপর দিকে লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকের খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। শহরের তুলনায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। সেখানে বিদ্যুত যায় না বরং বারবার আসে।

কাগমারা এলাকার মোজাম্মেল মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আমাদের এলাকায় সীমাহীন লোডশেডিং হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় গড়ে ১৬ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। এতে সেহরি, ইফতার ও তারাবিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

অপরজন মনির হোসেন বলেন, একদিকে প্রচণ্ড গরম। অন্যদিকে বিদ্যুত না থাকায় মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা বিরাজ করছে। গত চার থেকে পাঁচ দিন ধরে তারাবির নামাজে বিদ্যুৎ থাকে না। এতে গরমে অনেকের গোসল দেওয়ার মতো অবস্থা। মঙ্গলবার ২৭ তারাবিতে মাগরিবের সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। রাত সাড়ে ১০টায় বিদ্যুৎ আসে। অপর দিকে একই রাতে সাড়ে ১২টায় বিদ্যু চলে গিয়ে সেহরি পর সাড়ে ৫টায় বিদ্যুৎ আসে।

নাজমা বেগম নামের এক গৃহবধু বলেন, সীমাহীন লোডশেডিংয়ে শিশুদের খুব কষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা রাতে ঘুমও পারতে পারি না।

একাধিক কৃষকরা জানান, বিদ্যুত না থাকায় সেচ পাম্পের মালিকরা পানি দিতে পারছে না জমিতে। আর জমিতে পানি না দিতে পারলে ধানের আবাদও ভালো হবে না। অনেক দিন হলো বিদ্যুতের এ অবস্থা। কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুত পেলেও মেশিনের ইঞ্জিন চালুর হওয়ার পরই চলে যায়। কার কাছে বলবো কে সমাধান করবে। আবাদ না হলে মানুষ খাবে কি।

কাগমারা এলাকার সেচ পাম্পের মালিক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমার মেশিনের আওতায় প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ক্ষেতে ক্ষেতে ধানের শীষ বের হচ্ছে। এখন পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় পানি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মেশিন চালু করে পানি ক্ষেতে নামার আগেই বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে বোরো ধানের ভালো ফলন হবে না। ফলে কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু ধান নয়, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে।

পোল্ট্রি খামারিরা জানান, বিদ্যুত না থাকার কারণে গরমে প্রায় প্রত্যেক খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। বিদ্যুত না থাকায় মুরগি রাতে ছটফট করে ফলে আমাদেরও জেগে থাকতে হয়। দিনের গরমও মারাত্মক। বিদ্যুৎ অফিসে বারবার বলেও কোন সমাধান পাচ্ছি না।

টাঙ্গাইল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ওবায়দুল ইসলাম জানান, চাহিদার চেয়ে টাঙ্গাইল গ্রিডে বিদ্যুত কম পাওয়া যাচ্ছে। জাতীয় গ্রিড থেকে যা পাচ্ছি সেটাই সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে জেলা ও উপজেলায় লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে এবং ঈদে মাকের্টগুলো ও অফিস আদালত বন্ধ হওয়ার পর বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।