বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় মায়ের বিরুদ্ধে ওই নবজাতককে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) আগৈলঝাাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন মিলন বখতিয়ার নামে মৃত নবজাতকের বাবা।
মামলার প্রেক্ষিতে রুমা খানম নামে ওই সদ্য প্রসূতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ভোররাতে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকার ইউনিয়নের পূর্বপয়সা গ্রামের মিলন বখতিয়ারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, পূর্বপয়সা গ্রামের বাসিন্দা মিলন বখতিয়ার ও রুমা খানম দম্পতির অর্ধযুগের দাম্পত্য জীবনে ৫ বছরের মারুফা ও দেড় বছরের সোহানা নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ভোর রাতে মিলনের স্ত্রী রুমা খানম পুনঃরায় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের দুই ঘণ্টা পর ওই নবজাতকের গলায় রশি পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে ফেলে রাখেন মা রুমা খানম নিজেই। এসময় প্রতিবেশী সাদিয়া বেগম রুমার কন্যা সন্তানকে দেখতে আসেন। এসময় সদ্যজাতকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেলে ঘটনা প্রকাশ পায়।
জানাজানির এক পর্যায়ে আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মা রুমা খানম নিজেই তার কন্যা সন্তানকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেন।
পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই শিশুটির মা রুমা খানম জানিয়েছেন, আগের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের। সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া সন্তান কন্যা হওয়ায় ক্ষোভে-দুঃখে তাকে মেরে ফেলেছেন। এসময় পুলিশ মা রুমা খানমকে গ্রেপ্তার করে এবং সদ্যজাতের মরদেহ থানায় নিয়ে আসেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আল বেরুনী ও থানার ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রুমা খানমের স্বামী মিলন বক্তিয়ার জানান, ৭ বছর পূর্বে ভালোবেসে বিয়ে করেন খাজুরিয়া গ্রামের রুমা খানমকে। পরে পরিবার মেনে নিলে তাদের দাম্পত্য জীবনে দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। দেড় বছরের কন্যা শিশু থাকতে আবারও রুমা খানম তৃতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। রুমা হয়তো পরপর তিনটি কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়াতে সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানকে নিজ হাতে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় রুমার স্বামী মিলন বক্তিয়ার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকালে স্ত্রী রুমা খানমকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে এদিন (২০ এপ্রিল) দুপুরে শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া আসামি রুমা খানমকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
এনএস