ফরিদপুর: চৈত্রমাসের শেষের দিকে টানা ৯-১০ দিনের টানা খরা ও প্রচণ্ড তাপদাহে রূপ পরিবর্তন করেছে প্রকৃতি। সঙ্গে অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে পুড়ছে কৃষিবান্ধব সব এলাকা।
এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। তাপদাহে কাজ নেই তাদের। পুড়ছে ফসলের মাঠ। বাড়ছে বেকারত্ব।
গত সপ্তাহে ফরিদপুর জেলার ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন।
টানা ১০/১৫ দিনে ফরিদপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এ তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক।
এদিকে প্রকৃতি প্রচণ্ড গরম হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। বেলা বাড়ার পরপরই জেলা সদর সড়কে লোকের আনাগোনাও একেবারেই থাকছে না।
ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার কৃষাণ হাটের কুড়িগ্রাম থেকে আগত রহিম শেখ বলছেন, এই মৌসুমটা ভুট্টা কাটা ও বোরো ধানের ভরা মৌসুম। এখন চলছে প্রচণ্ড তাপদাহ, তীব্র খরা। তাই হাটে কৃষাণদের চাহিদা কমে গেছে।
ফরিদপুরের সালথার কৃষক ছুরাপ মাতুব্বর বলেন, এতো রোদ আর এতো তাপ যে, প্রতিদিন ধানক্ষেতে পানি দেওয়া লাগছে। বৃষ্টির কোন দেখা নেই। ভুট্টা কাটতে হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের ত্যাজে মাঠে কাজ করা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফরিদপুরের নগরকান্দার হাসিব শেখ, ইব্রাহিম মোল্যাসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, প্রচণ্ড রোদে মাঠে কাজ করা যায় না। রোদে মাঠের ফসল পুড়ে যাচ্ছে।
ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ভর্তি রোগী মো. কামাল হোসেন বললেন, গত ৪ দিন হাসপাতালে আছি ছেলেকে নিয়ে। ওয়ার্ডের সবগুলো ফ্যান চললেও আমার মাথায় ওপরের ফ্যানটা নষ্ট। এই গরমে ছোট বাচ্চা ছটফট করছে। বাধ্য হয়ে হাতপাখা কিনে বাতাস দিতে হচ্ছে। তবে রাতের বেলা কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসছে। সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও দুর্বিষহ গরম।
ফরিদপুরসহ সারাদেশে যারা ইট ভাটার ব্যবসা করেন, তারা প্রতিনিয়ত আকাশের মেঘের বৃষ্টির খবর নেন ঘণ্টায় ঘণ্টায়।
ভাটা সমিতির নেতা মো. মুজিবর মিয়া বলেন, কয়েক সপ্তাহ যাবৎ ফরিদপুরে প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে। গরমে আর কাটফাঁটা রোদে শ্রমিকরা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। যেমন বাড়ছে পানি ও খাবারের চাহিদা তেমনি বাড়ছে কষ্ট।
ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট পৌরসভার কামলার (শ্রমিক) হাট, কাস্ত ব্যবসায়ী দোকান খুলে বসে থাকলেও প্রচণ্ড তাপদাহে শ্রমিকদের কাজ নেই তাই বেঁচাকেনাও নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৩
এসএএইচ