ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢামেকে খসে পড়ছে রোগীদের বিছানার ফোম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৩
ঢামেকে খসে পড়ছে রোগীদের বিছানার ফোম

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রোগীদের বিছানার অবস্থা করুণ। স্টিলের খাটের ওপরে হাসপাতাল থেকে ফোম দেওয়া হলেও বছরের পর বছর সেগুলো ব্যবহার করতে করতে শুকিয়ে চুপসে গেছে।

অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে বেশিরভাগই ফোমের ওপরের কাপড় ছিঁড়ে গেছে। ফোম চুপসে শক্ত হয়ে খসে খসে পড়ছে। ফোম থেকে বের হচ্ছে দুর্গন্ধ।  সেসব ফোমের ওপর শুয়ে রোগীদের আরাম তো দূরের কথা, গায়ে চুলকানিসহ নানা অসুবিধায় পড়ছেন তারা। কিন্তু উপায় নেই। ওইসব বেডেই শুয়ে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ঈদের কারণে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে।  

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) হাসপাতালে পুরোনো ভবনে নিচতলায় ১০৩, ১০২, ১০১ সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিছানায় থাকা ফোমের করুণ অবস্থা দেখা যায়। ফোমগুলো এতটাই চুপসে গেছে যে, রোগীর স্বজনরা নিজ উদ্যোগে ফোমের ওপরে চাদর-কম্বল বিছিয়ে সেগুলোতে রোগীদের শোয়াচ্ছেন। তবে ওই ওয়ার্ডগুলোতে দুয়েকটি বিছানার ফোমের অবস্থা কিছুটা ভালো, যেগুলোর ওপরে রেকসিনের আবরণ রয়েছে।  

১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন জানান, বিছানার ফোমগুলো এতটাই চুপসে গেছে সেখানে রোগী শুতে অনেক কষ্ট হয়। তাছাড়া এই ফোমের ওপরে কাপড়ের একটি আবরণ রয়েছে সেখানে ময়লা জমাট বাঁধা। পাশাপাশি দুর্গন্ধ বের হয়। শরীরে চুলকানিসহ নানা রকম সমস্যা হয়। এই অবস্থায় মেরুদণ্ড ভাঙা, উঠে বসতে পারে না- সেই রোগীকে নিয়েই অবস্থান করছে হাসপাতালে স্বজন।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে জেনারেল স্টোরের ইনচার্জ শহিদুল্লাহ জানান, বর্তমানে স্টোরে দেড়শর মতন নতুন ফোম রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টাররা চাইলে স্টোর থেকে দেওয়া হয়। আরও ফোম আগামী সপ্তাহে আসার কথা, ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গেছে।

এদিকে হাসপাতালে থেকে একটি সূত্র জানায়, দুই হাজার ৬০০ শয্যার হাসপাতালে রোগী রয়েছে তিন হাজারের বেশি। অথচ স্টোরে মাত্র ১৫০টি আবরণযুক্ত ফোম মজুদ রয়েছে।  

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে অধিকাংশ স্টিলের খাটের ওপরে থাকা ফোমের অবস্থা বেহাল। ফোমগুলো একেবারে শুকিয়ে শক্ত হয়ে গেছে। অধিকাংশ ওপরের কাভার ছিঁড়ে গেছে।  কোনোটার আবরণ থাকলেও ময়লা জমাট বেঁধে আছে।

এদিকে জরুরি বিভাগের নতুন দায়িত্বে আসা ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ জানান, ওয়ার্ডের কিছু বিছানার জন্য ফোম চাওয়া হয়েছে।  শিগগিরই সেগুলো পাওয়া যাবে। এছাড়া তিনি বলেন, করোনার সময় নতুন ভবনের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনেক ফোম রোগীদের দেওয়া হয়েছে।

গত পাঁচ থেকে ছয় বছর টানা জরুরি বিভাগে ওয়ার্ড মাস্টারের দায়িত্বে ছিলেন জিল্লুর রহমান।  গত দুই মাস ধরে তিনি নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টারের দায়িত্বে আছেন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জরুরি বিভাগে ওয়ার্ড মাস্টারের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিন থেকে চার বছর আগে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিছানায় নতুন ফোম দেওয়া হয়েছিল।  

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সরকারি সফরে দেশের বাইরে থাকায় হাসপাতাল সরকারি পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমাদের পরিচালক স্যারকে জানিয়েছি। তাছাড়া আমাদের হাসপাতালে নতুন ফোম আছে।  

তিনি আরও বলেন, নির্দিষ্ট বিছানার বাইরেও হাজারের বেশি অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকে। বাড়তি বিছানায় বা ফ্লোরে। সে কারণে হয়তো সাময়িক কোনও অসুবিধা হতেও পারে।  তারপরও কোনও সমস্যা থাকলে আমাদের জানালে আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৩
এজেডএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।