ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেসক্লাব গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৩
প্রেসক্লাব গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর প্রেসক্লাব গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আজহারুল ইসলাম আজহার।  সাংবাদিকদের প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

 

তার এমন ঘোষণার পর ভূঞাপুর প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনাও ঘটে।  

আজহারুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি।

ভূঞাপুরে সিএনজি ও অটোরিকশা ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ও স্থানীয় প্রেসক্লাব নিয়ে এভাবে ক্ষোভ ঝাড়েন এই আ.লীগ নেতা।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভুঞাপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশের করে উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন।  

সেখানে আজহারুল বলেন, সিএনজির বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অবৈধ প্রেসক্লাবের কতিপয় সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করেছে। তারা শ্রমিকদের শত্রু। শ্রমিকদের পক্ষে না থেকে বিপক্ষে সংবাদ প্রকাশ করে। ওই সব সাংবাদিকদের প্রতিহত করা হবে। এছাড়া প্রেসক্লাবে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসক্লাব সরিয়ে না নেওয়া হলে সেটি গুড়িয়ে দেওয়া হবে।  

এ সময় 'সময়ের আলো' পত্রিকার ভুঞাপুর উপজেলা প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান তপু ওই সমাবেশের ছবি তোলার পর তাকে ধাওয়া করে শ্রমিকরা। পরে ওই সাংবাদিক প্রাণরক্ষার্থে ভুঞাপুর প্রেসক্লাবে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালায় শ্রমিকরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ হামলার ঘটনায় উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আজহারুল ইসলাম আজহার এবং সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহিদ হাসানসহ অজ্ঞাত ৯০/১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভুঞাপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শাহআলম প্রামাণিক বলেন, প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে।

ভুঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এরআগে গত ১ মে দুপুরে ওই আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক নেতা আজহারুল ইসলাম বিভিন্ন সড়কে সিএনজি ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেন। তখন থেকেই সিএনজি ও অটোরিকশাতে বাড়তি ভাড়া নেওয়া শুরু হয়।

ভুঞাপুর উপজেলা সিএনজি-অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আজহারুল ইসলাম আজহার বলেন, রাগান্বিত হয়ে ভুঞাপুর প্রেসক্লাব ভবন অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানানোসহ তালা দেওয়ার বক্তব্যটি দিয়েছি। তবে প্রেসক্লাব ভবনে হামলা বা সাংবাদিকদের ধাওয়া দেওয়ার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি।  

এ সময় তিনি আরও বলেন, ভাড়া বৃদ্ধির দাবি তোলা হলেও এখনো আগের নির্ধারিত ভাড়াই নিচ্ছেন শ্রমিকরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলাল হোসেন বলেন, প্রেসক্লাবে হামলা ও সাংবাদিককে ধাওয়া দেওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। ভাড়ার বৃদ্ধির বিষয়ে শ্রমিক নেতারা আমার কাছে এসেছিল, আমি উপজেলা প্রশাসনসহ তাদের সব নেতাদের নিয়ে সভা করব।  সেখানে সরকারি বিধি মোতাবেক এ ব্যাপারে কি করা যায় সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শ্রমিক নেতাদের আজ থেকে পূর্বের ভাড়া নিতে বলে দেওয়া হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৩
এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।