ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে ওয়ারড্রবে রাখার পর ফেলে দেন খালে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৩
স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে ওয়ারড্রবে রাখার পর ফেলে দেন খালে!

লক্ষ্মীপুর: পারিবারিক বিরোধের জেরে স্ত্রী রওশন আরা বেগমকে (৩০) গলা টিপে ও ঘুমন্ত শিশু নুসরাতকে (১) বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পাষণ্ড জামাল উদ্দিন। পরে তাদের মরদেহ ওয়ারড্রবে ঢুকিয়ে রাখেন তিনি।

ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটিয়ে মরদেহগুলো লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এলাকায় এনে একটি খালে ফেলে দেন জামাল। পরে পুলিশ খালের পৃথক স্থান থেকে অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনার ২০ দিন পর র‍্যাব হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে। গ্রেপ্তার করা হত্যাকারী পাষণ্ড জামাল উদ্দিনকে।

শুক্রবার (০৫ মে) দুপুরে র‍্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান এক প্রেস ব্রিফ্রিং করে এ তথ্য জানান।

এর আগে বৃহস্পতিবার (০৪ মে) তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকায় শ্যামপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জামাল হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তার জামাল চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণের বহরীগ্রামের রুহুল আমিন মিঝির ছেলে। ভিকটিম রওশন আরা বেগম তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালী থানার আজোলবেড়া গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে।

জামালের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, ২০১৯ সালে জামাল উদ্দিন রওশন আরাকে বিয়ে করেন। রওশান আরা জামালের দ্বিতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর থেকে জামাল ও রওশন আরার পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা রায়েরবাগ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। এরই মধ্যে তাদের সংসারে নুসরাতের জন্ম হয়।

গত ১৫ এপ্রিল দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রী রওশনকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জামাল। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় এক বছরের শিশু কন্যাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন তিনি। পরে বাসার মালামালসহ দুইজনের মরদেহ ওয়্যারড্রবে রেখে দেন। পরিচিত একজনের পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে তিনি ওয়ারড্রপসহ বাসার মালামাল পিকআপভ্যানে তোলেন। নোয়াখালীর উদ্দেশে জামাল ঢাকা থেকে রওয়ানা দেন। কিন্তু নোয়াখালী না গিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের দুইটি পৃথক স্থানে ব্রিজের নিচে লাশগুলো খালে ফেলে দেন তিনি।

পরে ১৯ এপ্রিল রামগঞ্জ-সোনাইমুড়ি সড়কের পাশে খালের হানুবাইশ ব্রিজের নিচে শিশু ও পাশ্ববর্তী আলীপুর এসপি বাড়ির সামনের ব্রিজের নিচ থেকে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওইদিন রাতে রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব কুমার দাস বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাত অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব ঘটনাটির ছায়া তদন্তে নামে।

র‍্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান, মরদেহগুলো উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে মা ও মেয়ে হিসেবে শনাক্ত করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় এক নারী ও এক শিশুর নিখোঁজ ডায়েরি আছে। রামগঞ্জে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে নিহত রওশনের স্বামীকে সন্দেহ করা হয়। কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ফোনও বন্ধ ছিল। পরে গোয়েন্দা তদন্ত ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকার শ্যামপুর এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার জামালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।