ঢাকা: পুরোনো চাল ছাঁটাই করে নিয়ে এসে নতুন বলে বিক্রি করতে চাইলে কোনোভাবেই কেনা যাবে না বলে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেছেন, গত মৌসুমে যেসব মিলার চাল ক্রয়ে চুক্তি করেনি, তারা এবারও তা করতে পারবে না।
রোববার (০৭ মে) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে বোরো সংগ্রহ অভিযান ২০২৩ উদ্বোধন শেষে সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দিতেই সরকার ধান কিনছে। সরকার যদি ধান না কেনে, তাহলে একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেরাই মূল্য নির্ধারণ করে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমাদের ধান কেনার টার্গেট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারি কিংবা না-পারি, টার্গেট যদি থাকে। ক্রয়ের মধ্যে থাকি, তাহলে সিন্ডিকেট করে কৃষকদের ঠকাতে পারবে না ব্যবসায়ীরা। বোরোতে চার লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, তারপরেও আমরা বলেছি, বাজারে যদি সেই অবস্থা থাকে, কৃষক যদি ন্যায্যমূল্য না-পায়, তাহলে আমরা তার চেয়ে বেশিও কিনতে পারি।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা ধান দিতে এসে যাতে কোনো কষ্ট না পান। কৃষকরা পেটের যোগান দেন, তারা সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি, তাদের মর্যাদা দিতে হবে। তারা ধান নিয়ে এসে ফেরত দিতে না হয়।
তিনি বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের উচিত হবে, কৃষকরা ধান দেবে, তাদের বাড়িতে গিয়ে ময়েশ্চার মেশিন দিয়ে আর্দ্রতা দেখে নেওয়া। তারপর ভালো ধান গুদামে নিয়ে গেলে, তা যদি ফেরত দেওয়া হয়, তাহলে আমার পরিষ্কার কথা, তাদের (কর্মকর্তাদের) জবাবদিহিতা ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
মিল মালিকদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, কোনো খারাপ চাল যাতে কেনা না হয়। পুরোনো চাল ছাঁটাই করে নিয়ে এসে নতুন বলে বিক্রি করতে চাইলে তা যাতে কেনা না হয়। কোনোভাবেই এ ধরনের চাল কেনা যাবে না। নীতিমালা অনুসারে ভালো চাল কিনতে হবে। যখন আমরা খোলাবাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি বা ওএমএসে যখন চাল দেওয়া হবে, তখন যাতে তা ভালো থাকে। মানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।
মন্ত্রী বলেন, গত মৌসুমে যেসব মিলার চাল ক্রয়ে চুক্তি করেনি, তারা এবারও তা করতে পারবে না। তাদের যাতে ফিটলিস্ট হিসেবে তালিকা না পাঠানো হয়, তা মনে রাখতে হবে। আজ থেকে সারা বাংলাদেশে ধান ও চাল কেনা শুরু হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও জানাতে হবে যে আমরা ক্রয় শুরু করেছি। প্রান্তিক কৃষকদের ফিরিয়ে দিয়ে কোনো ব্যবসায়ীর ধান যাতে কেনা না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার, সারের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে যাওয়ায় কিছুদিন আগেও হতাশায় ছিল কৃষকরা। কিন্তু ভর্তুকির এত বেশি ছিল যে সারের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে সরকার। কৃষকরা বলেছিল, এক বিঘা জমিতে আমাদের ৬৬৫ টাকা বেশি গুণতে হবে এখন। সে দিকে চিন্তা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ত্রিশ টাকা যদি ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়, এক বিঘা জমিতে ২০ থেকে ত্রিশ মণ ফলন হয়, এক হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধৃত্ত পাবেন কৃষকরা। তাহলে ৬৬৫ টাকা কাভার করা তাদের জন্য কষ্টকর হবে না৷
তিনি বলেন, সারের দাম বেড়েছে, এখন কৃষক যদি ধানের দাম বাড়ায়, তাহলে তারা পুষিয়ে নিতে পারবে। কৃষকের এই অভিমতও আমরা আমলে নিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, মে ০৭,২০২৩
জিসিজি/এসএ