টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে জোড়া লাগানো শিশুর জন্ম হয়েছে। আরিফ-সুমাইয়া দম্পতির ঘরে জন্ম নেওয়া এই জোড়া লাগা শিশুর চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত পরিবার।
এর আগে গত শনিবার (৬ মে) রাত আড়াইটার দিকে টাঙ্গাইল শহরের রাজধানী নার্সিং হোমে সিজারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম দেন সুমাইয়া আক্তার।
সুমাইয়া টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা ইউনিয়নের আগ দিঘুলিয়া গ্রামের আরিফ হোসেনের স্ত্রী। জন্ম হওয়ার তিনদিন পর গত ৯ মে মাসহ সন্তান দুইটিকে বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। জোড়া লাগানো যজম শিশু জন্ম হওয়ার খবরে শিশুদের দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে প্রতিবেশীসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জোড়া লাগানো যমজ শিশু দুইটিকে আলাদা করা সম্ভব। এজন্য অপারেশনের ব্যয় অনেক। এর আগেও এ ধরনের শিশু অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করা সম্ভব হয়েছে।
গ্রামের বৃদ্ধা নুরজাহান বেগম বলেন, জীবনেও জোড়া লাগানো শিশু দেখিনি। তাই দেখতে এসেছি।
যজম সন্তানের বাবা আরিফ হোসেন বলেন, স্ত্রী যমজ দুই শিশু জন্ম দিয়েছে। কিন্তু তাদের বুক একে অপরের সঙ্গে জোড়া লাগানো। ডেলিভারির আগে আল্ট্রাসনোগ্রাফে বাচ্চা যমজ জানতে পারলেও জোড়া লাগানোর বিষয়টি জানা যায়নি। জন্মের পর দেখা যায় তাদের শরীর জোড়া লাগানো। ক্লিনিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ না থাকায় তাদের টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ৯ তারিখ বাসায় নিয়ে আসি। স্ত্রীসহ সন্তান দুটি এখন সুস্থ রয়েছে। বিকল্প পদ্ধতিতে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালানোই কষ্টকর। এর মধ্যে যজম দুই সন্তানের চিকিৎসা করানো সামর্থ্য নেই।
শিশু দুটিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বিত্তবানসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
জোড়া লাগানো দুই সন্তানের মা সুমাইয়া আক্তার বলেন, শরীর জোড়া লাগানো থাকলেও খাবার ও প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা আলাদা। সন্তান দুজনকে আলাদা শরীরে দেখার খুবই ইচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয় বহন করা আমাদের মত দরিদ্র পরিবারের নেই। স্বামী যে উপার্জন করে তাতে সংসার ঠিক মত চলে না।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. লিংকু রাণী কর জানান, চিকিৎসা শাস্ত্রে এটিকে কনজয়েন্ড টুইন বেবি বা সংযুক্ত যমজ শিশু বলা হয়। এটি অবশ্যই জটিল একটি চিকিৎসা। অস্ত্রোপচার করা গেলে সফলতা সম্ভব। এর আগেও দেশে জোড়া লাগানো বেশ কয়েকটি শিশুর অস্ত্রোপচার হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
আরএ