ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানিতে এখন আর ক্ষতিকর পোকামুক্ত করতে বিষবাষ্পের ব্যবহার করা হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
রোববার (২১ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের (ইউএসটিআর) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
বৈঠকে অংশ নিয়েছেন ইউএসটিআরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্রেন্ডান লিঞ্চ, দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক পরিচালক মাহনাজ খান, আঞ্চলিক আইপি অ্যাটাশে জন কাবিকা, অ্যাসিস্ট্যান্ট টু দা রিজওনাল আইপি অ্যাটাশে শিল্পী ঝা প্রমুখ।
কৃষি সচিব বলেন, আমরা যখন তুলা আমদানি করি, তখন সেটিকে ১০ দিন বন্দরে রেখে বিষবাষ্প (ফিউমিগেশন) দিয়ে জীবন্ত ক্ষতিকর পোকা দমন করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ছিল, সেখান থেকে আমদানি করা তুলার ক্ষেত্রে যাতে এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা না হয়। তুলার এই জীবন্ত পোকা খুবই ভয়ঙ্কর। এই পোকায় আক্রান্ত হলে সেই তুলা দিয়ে আর সুতা হয় না।
ওয়াহিদা আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষবাষ্প দিয়ে আমরা তুলাকে ক্ষতিকর পোকামুক্ত করে আসছি। কিন্তু তাদের দাবি ছিল, এই প্রক্রিয়ার দরকার নেই। এটি যাতে আমরা না-করি। এরপর গেল বছর আমাদের একটি টেকনিক্যাল টিম যুক্তরাষ্ট্রে যায়। বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে দেখা গেছে, তারা তুলার ওই ক্ষতিকর পোকামুক্ত করছে। আর তারা যে প্রেসারে তুলা আমাদের কাছে পাঠায়, তাতে কোনো ক্ষতিকর পোকার বেঁচে থাকার শঙ্কা নেই। এরপর সবকিছু মিলিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেয়, বিষবাষ্প দিয়ে তুলাকে ক্ষতিকর পোকামুক্ত করার প্রক্রিয়া থেকে তাদের রেহাই দেওয়া যেতে পারে।
‘তখন আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি, তারা যদি এ সংক্রান্ত নীতির পরিবর্তন আনে, তাহলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আপত্তি নেই। তখন তারা জানিয়েছে, যদি কৃষি মন্ত্রণালয় কোয়ারেন্টাইন আইন সংশোধন করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। এরপর আমরা কোয়ারেন্টাইন আইন সংশোধন করি। গেজেটও প্রকাশিত হয়েছে। ’
এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কাছ থেকে তুলা আমদানিতে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওয়াহিদা আক্তার।
তিনি বলেন, তবে তাদের কোয়ারেন্টাইন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি সনদ লাগবে, যাতে বলা থাকবে এই তুলা সম্পূর্ণ ক্ষতিকর পোকামুক্ত।
কৃষি সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশের তুলার চাহিদার ৯০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমাদের চাহিদামতো দেশে তুলা উৎপাদন হয় না। কারণ, এটি শীতকালীন ফসল। কিন্তু এ সময়ে আমরা বোরো চাষ করি। বোরোর সঙ্গে আমরা আপস করি না। যেহেতু আমাদের ১৭ কোটি মানুষের দেশ, খাবার হিসেবে আমরা ভাতে অভ্যস্ত, সেহেতু আমাদের ধান চাষে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। আমাদের দেশে দুই লাখ বেলের মতো তুলা উৎপাদন হয়। কম হলেও এই তুলা খুবই উন্নতমানের। চাহিদার অধিকাংশই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রতি বছর ৮০ থেকে ৮৫ লাখ বেল তুলার দরকার পড়ে বাংলাদেশের। সেখানে দেশে উৎপাদন করা হয় দুই লাখ বেল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
জিসিজি/এমজেএফ