ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে থাকাদের ভিসানীতি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই’

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
‘অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে থাকাদের ভিসানীতি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই’

ঢাকা: ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে থাকবে তাদের মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মঙ্গলবার (৩০ মে)  ঢাকায় এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড দ্য আর্টসে (ইএমকে সেন্টার) যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর শীর্ষক এক বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠান শেষে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

পিটার হাস বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মানুষ ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে সহযোগিতা করতে এ ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। সব বাংলাদেশিরা যা চায়, যুক্তরাষ্ট্রেরও একই চাওয়া। আর সেটি হচ্ছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতি পরিষ্কার করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্যরা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পরিষ্কার করেছেন। বাংলাদেশে এসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশি যাদের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে, তারাও একই মত প্রকাশ করেছেন।

নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আস্থা থাকলে কেন ভিসানীতি প্রকাশ করতে হলো- জানতে চাইলে তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেছেন, তা হলো এ ঘোষণা বাংলাদেশের মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে সহযোগিতা করার জন্য। সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তার নীতি ব্যবহার করেছে।

ভিসানীতি সাধারণ মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হবে কিনা-জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে এ ভিসানীতি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর ব্যবহার করা হবে। যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে থাকবে তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

এর আগে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। ইএমকে সেন্টারে আয়োজিত এ প্রদর্শনী আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত চলবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর বর্ধিত উদযাপনের অংশ হিসেবে ৫০টি ঐতিহাসিক আলোকচিত্র নিয়ে আয়োজিত এ প্রদর্শনীটি ছয়টি স্বতন্ত্র বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-‘স্বাধীনতাপূর্ব যোগাযোগ’ বিভাগে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতারও আগে বাংলাদেশি ও আমেরিকানদের তথা শুরুর দিকের অভিবাসী, শিল্পী, পণ্ডিত, স্থপতি, ডাক্তার ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার আদি বীজ নিহিত আছে।

‘দাপ্তরিক সফর’ বিভাগে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের দ্বিপাক্ষিক সফর ও বৈঠকের ছবি দেখানো হয়েছে। ‘সহায়তা ও অবকাঠামো’ বিভাগে বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে।

‘ব্যবসা-বাণিজ্য’ বিভাগে গতিময় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। ‘শিক্ষা ও বিজ্ঞান’ বিভাগটিতে দেখা যায় বাংলাদেশি ও আমেরিকান বিজ্ঞানী ও পণ্ডিতরা গত কয়েক দশক ধরে বহু ধরনের গবেষণা প্রকল্পে কীভাবে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করেছেন।

আর সংস্কৃতি ও প্রবাসী সম্প্রদায়’ বিভাগটিতে উভয় দেশ অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির মাধ্যমে কীভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে সে বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

আলোকচিত্র প্রদর্শনী শেষে দেওয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন না করায় যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতাকামী জনগণ আমাদের সমর্থন দিয়েছে। যদিও সে সময়ে মার্কিন সরকারের অন্য অগ্রাধিকার ছিল। তৎকালীন ঢাকার মার্কিন কনস্যুল জেনারেল আর্চার কে ব্লাড এবং তার সহকর্মীদের সাহসী সিদ্ধান্তের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই যে, তারা মার্কিন সরকারের নীতির প্রতি সে সময়ে ভিন্নমত জানিয়েছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীর আশ্রয় পাওয়ার বিষয়টি অনুশোচনার বলে মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, একজন খুনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে আশ্রয় পেয়ে আছে, বিষয়টি সত্যি অনুশোচনার।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, মে ৩০,  ২০২৩
টিআর/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।