লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর শহরের সামাদ মোড়ে প্রকাশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) সন্ধ্যায় সদর থানায় পৃথক এই তিনটি মামলা রুজু করা হয়।
বিস্ফোরক ও সড়ক দুর্ঘটনা আইনে দায়ের করা মামলার বাদী পুলিশ। আর ডাকাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী হয়েছেন আর কে শিল্পালয়ের মালিক আহত অপু কর্মকারের ছেলে শান্ত কর্মকার।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ডাকাতির ঘটনায় আটক দুইজনসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও সাত-আট জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ওই পিকআপভ্যানের চালক। ভূক্তভোগী অপু কর্মকারের ছেলে শান্ত কর্মকার মামলাটির বাদী হয়েছেন। এতে আনুমানিক ২০ ভরি স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল হোসেন বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলাতেও আটক দুইজনসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও সাত-আটজনকে অজ্ঞাত অভিযুক্ত করা হয়।
এদিকে ডাকাতদের পিকআপভ্যানচাপায় সফি উল্যা (৬০) নামে এক পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলার বাদী সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা। এ মামলাতেও আটক দুইজনসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং সাত-আটজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ওসি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ঘটনার সঙ্গে অন্য যারা জড়িত ছিল, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, বুধবার (০৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাত থেকে আটজন দুর্বৃত্ত ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে আর কে শিল্পালয় নামক সোনার দোকান থেকে স্বর্ণালংকার লুট করেন। এ সময় দোকান মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বেশ কিছু ককটেল জব্দ করে।
এদিকে ডাকাতদল পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের বহনকৃত পিকআপভ্যানটি ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের ইটেরপুল এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাদের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে সফি উল্যা (৬০) নামে এক পথচারী নিহত হন। এছাড়া আহত হন ইসমাঈল হোসেন নামে আরও এক পথচারী। সেখান থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় ডাকাত দলের সদস্য সবুজ ও মনসুর নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। তাদের মধ্যে সবুজের বাড়ি বরগুনা জেলায় এবং মনসুরের বাড়ি নরসিংদী জেলায়।
অন্যদিকে ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার নেতারা জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ সময় তারা জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। একই সঙ্গে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকারও উদ্ধারের দাবি জানান তারা।
এছাড়া জেলার জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বাজুস লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সভাপতি হরিহর পাল বলেন, ডাকাতদের হামলায় আর কে শিল্পালয়ের মালিক আহত অপু কর্মকারকে ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার পর থেকে জেলার জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন তারা। আমরা প্রশাসনের কাছে ঘটনার বিচারসহ জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২৩
এফআর